পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় সপ্তম খণ্ড.djvu/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

, 6.8 জন্যই পুনঃপুন উপদেশপ্রদান করিতেন। দুর্গনিৰ্ম্মাণে, সেনাদলসংগঠনে, অথবা কলহবর্ধনে তাহদের অনুরাগ লক্ষিত হইত - না। রাজ্যবিস্তারে তাহাদিগের বিভীষিকাই লক্ষিত হইত। তাহুদিগের উপদেশ অগ্রাহ করিয়া ক্লাইব যে রাষ্ট্রবিপ্লবের্ণলপ্ত হইয়াছিলেন, তাহার কৈফিয়ৎ দিবীর সময়ে ক্লাইবকেও বাণিজ্যরক্ষার কথা বলিয়াই আত্মকার্য্যের সমর্থন করিতে হইয়াছিল। র্তাহারা ক্লাইবের নিকট সাক্ষাৎসম্বন্ধে পরিণামে যথেষ্ট উপকার লাভ কেনিয়াছিলেন। কিন্তু তাহার কেহই ক্লাইবের প্রস্তরমূৰ্ত্তিসংস্থাপনের প্রয়োজন অনুভব করেন নাই। এতকাল্ল পরে ইহার আয়োজন হইতেছে কেন,—ভারতবর্ষের লোকে তাহাব কারণ অমুসন্ধান করিবার জন্ত স্বভাবতই কৌতুহলপ্রকাশ করিতে পারে। লর্ড কর্জন তাহাদিগকে কিরূপ প্রত্যুত্তর দিতে পারবেন? সত্য কথা বলিতে ইষ্টলে, কি বলিয়া অস্বল্পপক্ষের সমর্থন করিবেন ? মিথ্যা বলিলে, ইংরাচরিত্র কলঙ্কিত হইরে। সত্য বলিলেও, ইংরাজের উদারনীতি প্রশংসালাভ করবে না। এরূপ কার্য্যে অগ্রসর হইবার প্রয়োজন কি ? প্রয়োজন আছে। ভারতবর্ষকে বিজিত দেশ বলিতে না পারিলে, তাহাকে বিজিতদেশের স্তায় যথেচ্ছ শাসন করা চলে না ; — তাহাকেও বৃটিশসাম্রাজ্যভুক্ত অন্যান্য দেশের স্থায় স্বাধীনতা প্রদান করিতে হয়। সুতরাং ! ভারতবর্ষকে বিজিতদেশ বলিয়া প্রতিপন্ন না করিলে, ভারতশাসননীতির সমর্থন করা যায় না। তজ্জন্য বিজিতদেশ বলিলেই চলে না, दन्नलर्जन । [ ৭ম বর্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৪ কে ভারতবিজেতা, তাহীও দেখাইয়া দিতে হয়। ক্লাইবকে জনসমাজের সম্মুখে সেই বিজেতার মুক্তিতে প্রতিষ্ঠিত করিবার জন্য প্রস্তরমূৰ্ত্তির প্রয়োজন। কিন্তু ক্লাইব কি ভারতবিজেতা ?— পলাশী কি বিজয়ক্ষেত্র ?—বাঙালী" কি রণপরাজিত ?—এই সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে হইলে, ইতিহাসলেখকগণকে গলদঘর্ষ হইতে হইবে। ক্লাইব বিজয়লাভ করিয়াছিলেন, তাহা সত্য কথা । কিন্তু ইহাও ਸ਼ਣਾ কথা,— সে বিজয় লেখনীবলেই সাধিত হইয়াছিল,— তাহার বিজয়ক্ষেত্র পলাশী নহে,—মীরজাফর থা বাহাদুরের উচ্চপ্রাচীরবেষ্টিত অস্তঃপুর ! সেখানে ক্লাইবের প্রতিনিধি ওয়াটুলসাহেব, শ্বির্ণকারোহণে অবগুণ্ঠনবতী বেগমের ন্যায় গোপনে প্রবেশলাভ করিয়া, গুপ্তসন্ধিপত্র স্বাক্ষরিত করিয়া আনিয়াছিলেন ! সেই সদ্ধিপত্র এইরূপে স্বাক্ষরিত হইয়াও ফলদান করিতে পারিত না --উমিচাঁদ প্রতারিত না হইলে, সকল, কথাই প্রকাশিত হইয়া পড়িত। তাহার জন্য আর একখানি জালসন্ধিপত্রের অবতারণা করিতে হইয়াছিল। সেই জালসন্ধিপত্ৰই বঙ্গবিজেতা কর্ণেল ক্লাইলের প্রকৃত ব্রহ্মাস্ত্র। বঙ্গবিজয়ের স্মৃতিস্তম্ভ সংস্থাপিত করিতে হইলে, সেই স্তম্ভগাত্রে জাল<সন্ধিপত্রখানিও খোদিত করাইয়া রাখিতে হয় । ইংরাজেরা - এই সকল কারণেই এতকাল ক্লাষ্টবের কীৰ্ত্তিস্তস্তুসংস্থাপনের আয়োজন করেন নাই। এখন সেই আয়োজনে প্রবৃত্ত । হইলে, কেহই ইংরাজের বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করিতে পরিবে না। e {. ঐসকল্পনার মৈত্রেয়।