পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাহারা ছিল, তাহান্না কেহই প্রায় নিকটে আসে না, মুখের দিকে চাহেন, লুকাইয়া লুকাইয়া বেড়ায়, দুটী দুটী অন্ন দিতে হয়, তাহাই দেয়। ’বকালে’ নাপিত আসিয়া, মাথা নেড়া করিয়া দিল। • জ্যেষ্ঠপুত্ৰটী এক একবার আঁসিয়া সেই Gज़ा মাথায় জল ঢালিতে লাগিল, তাহার পর ডাক্তার আসিলেন, নাড়ী দেখিয়া তিনি বললেন, “জর নয়, বায়ুরোগে নাড়ীর গতি যেমন থাকে, সেই রকম ; ঔষধ খাওয়াইতে হইবে, কোন ভয় নাই।” ডাক্তারের সঙ্গে জীবনবন্ধুর বন্ধুত্ব ছিল, তিনি ভিজিট লাইলেন না, অখিলকে সঙ্গে করিয়া লইয়া গিয়া তিন শিশি ঔষধ পাঠাইয়া দিলেন, চিকিৎসা আরম্ভ হইল। রাত্রিকালে বাড়ীর তিন দিকে মহা গোলমাল। তিন দিকেই খোলা জায়গা, বাগান ৷ আর একটা পুষ্করিণী ; কেবল একদিকে প্ৰতিবাসী গৃহস্থ (司 কের বাড়ী। গভীর চীৎকারধ্বনিতে কাহারও নিদ্রা হইবার সম্ভাবনা ছিল না, কিন্তু প্রতিবাসী লোকেরা কারণ জানিয়াছিল, তাহারা স্বচ্ছন্দে ঘুমাইল, জীবনবন্ধু ঘুমাইতে পারলেন না, বাড়ীর পরিবারেরাও ঘুমাইতে লাগিল। ভোরবেলা জীবনবন্ধু শুনিলেন, অতি উচ্চ চীৎকারে তঁহার বাড়ীর পার্শ্বের বাড়ীর ছাদ হইতে বহু কণ্ঠমিলিত শ্মশানধ্বনি ;-“বল হরি হরি বোল হার!” জীবনবন্ধুর হৃৎকম্প উপস্থিত। বাড়ীর পরিবারের দূরে দূরে থাকিয়া খিলখিল করিয়া হাসে, হাতের কারণ জিজ্ঞাসা করিলে জীবনবন্ধুকে তাহারা গঞ্জনা দেয়, মুখ বাকাইয়া চলিয়া যায়, বাড়ীর চাকর রাধানাথ তাঁহাকে গ্ৰহ করে না। , অখিলবাবুর হুকুমে রাধানাথ এক একবার অখিলবাবুর পিতার মুখের কাছে লম্বা লম্বা বেত নাচায়, নৃত্য করিতে করিতে হাস্ত করে। দিন দিন এইরূপ চলিতে লাগিল, দিন দিন নিশাকালে উৎকট চীৎকার ; দিন দিন উষাকালে পাশের বাড়ীতে “বল হরি হরি বােল” ধ্বনি! প্রতিবাসীরা কেহই আর জীবনবন্ধুর বাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করেন না। সেই পাঁচজন ভদ্রলোক প্ৰথমে একবার দেখা দিয়া গিয়াছিলেন, কয়েদ রাখিবার ব্যবস্থা করিয়াছিলেন, তীহারাও আর দেখা দেন না। গ্রামের সকলেই নীবনবন্ধুর আত্মীয়। কায়স্থ曾 তির মধ্যে প্রায় সকলের সঙ্গেই র্তাহার সম্পর্ক ছিল, সকলেই তঁহাকে ভালৰাসিত। এই অবস্থায় সকলেই বিরূপ। " : - । একমাস অতীত হইল, পাগলের চিকিৎসা হইতে লাগিল, রাত্রিকালে চীৎকার