পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

te বঙ্গ রহস্য । , প্রকারে আদালতে হাজির হইতে পারে, সেই প্রকারে হাজির করিবার জন্য বিচারকের হুকুম হইল, পান্ধী করিয়া ত্রিপুরাসুন্দরী ফৌজদারী কাছারীর বাহিয়ে উপস্থিত হইল। একজন উকীলকে মধ্যবৰ্ত্তী করিয়া ডেপুটী মাজিষ্ট্রেট তাহার জবানবন্দী লাইলেন। একজন স্ত্রীলোক তঁহদের উভয়ের কথা উভয়কে বুঝাইয়া দিল। ত্রিপুরা বলিল, “হারিবিলাস দত্ত আমার বাল্য-শিক্ষক। অধিক দিন ঘনিষ্ঠত হওয়াতে হরিবলাসের প্রতি আমার ভালবাসা জন্মিয়াছিল। হরিবিলাসকে বিবাহ করিতে আমি ইচ্ছা করিয়াছিলাম, আমার পিতাও সেই কথা শুনিয়াছিলেন । হরিবিলাসের সহিত আমার বিবাহ হইতে পারে, আমার পিতা বংশ-পরিচয় মিলাইয় তাহা জানিতে পারিয়াছিলেন । হরিবিলাসকেই জামাতা করা তাহার অভিপ্ৰায় হইয়াছিল। তিনি বাগদান করিয়াছিলেন। তাহার পর জানি না, কি কারণে অন্য বরের সহিত আমার সম্বন্ধ হয়। সে সম্বন্ধে আমার মত ছিল না, আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই পিতা আমাকে নূতন বরে সম্প্রদান করিয়াছিলেন। আমার বয়স এখন পঞ্চদশ বর্ষ। হরিবিলাসের ভালবাসা আমি ভুলিতে পারি নাই। জ্বরের সময় শ্বশুরবাটী হইতে আপন ইচ্ছায় আমি পলায়ন করিয়াছিলাম। আমার ভ্ৰাতা আমাকে কলিকাতায় লইয়া গিয়াছিল ; হরিবিলাসও সেই সঙ্গে ছিল। হরিবিলাস আমাকে বাহির করিয়া আনে নাই, শ্বশুরবাট হইতে পলায়ন করিবার পরামর্শও হরিবিলাস দেয় নাই ; আমি আপন ইচ্ছাতেই সমস্ত কাৰ্য্য করিয়াছি।” উকীলের জেরাতে ত্রিপুরাসুন্দরী আরও বলে, “হারিবিলাসকে আমি ভালবাসি, পূর্বেও ভালবাসিয়াছিলাম, এখনও ভালবাসি। আমাকে অসতী স্থির করি । আমার স্বামী যদি আমাকে গ্ৰহণ করিতে না চান, তাহা হইলে আমি আমার স্বামীর গৃহ হইতে স্বতন্ত্র থাকিব, ইহাই আমার ইচ্ছ। আমার পিতা পূর্বে হরিবিলাসের সঙ্গে বিবাহ দিবেন বলিয়া বাগদান করিয়াছিলেন। আমি লেখাপড়া শিখিয়াছি; বাগদানে বিবাহ সিদ্ধ হয়, ইহাও শুনিয়াছি। দ্বিতীয় পাত্ৰে অৰ্পণ করিয়া আমার পিতা অন্যায় কাৰ্য্য করিয়াছিলেন। বাগদানেই আমার একবার বিবাহ হইয়াছিল, আপনারা ব্ৰাহ্মণপণ্ডিতগণের ব্যবস্থা লইয়া আমার কথা-‘প্রমাণে যদি বাগদানকে বিবাহ বলিয়া शैक्षांद्र श्ब्रन, তাহা হইলে আমার নূতন বিবাহ অসিদ্ধ হইয়াছিল, ইহা জানিতে পরিবেন।” ।