পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*ተቀማ ♥፱ቐ ! W ভবতরণ শ্ৰীমানী বঙ্গের মফস্বলের একজন ভূম্যধিকারী। একটী নদীতীরের উদ্যানে বৈঠকখানাবাটী নিৰ্ম্মাণ করিয়া তিনি বাস করিতেন। বাটীর স্ত্রীলোকেরা সেখানে থাকিতেন না, বাবু কেবল নিজের পরিষদবৰ্গ-বেষ্টিত হইয়া সেই স্থানে বিষয়-কাৰ্য্যাদি করিতেন। বাবুর ইংরাজী জানা ছিল না, ইংরাজী শিখিবার জন্য র্তাহার অনুরাগ জন্মে। একজন ভদ্রসন্তানকে তদৰ্থে মনোনীত করিয়া তিনি সেই উদ্যানবাটীতেই যত্নপূর্বক রাখিয়া দেন। শিক্ষকটীির নাম জীবনবন্ধু মিত্র। দেড় বৎসর সেই মনোরম উদ্যানে বাস করিয়া তিনি ভবতারণ বাবুকে দুই তিনখানি ইংরাজী পুস্তক পড়াইলেন। ভবতারণের বুদ্ধি কিছু মােটা ছিল, পক্ষান্তরে তঁহার বিলাসবাসনা অত্যন্ত প্রবল ছিল, তিনখানি পুস্তক পাঠ করিয়াও তিনি কিছু শিখিতে পারিলেন না । তঁহার মন সৰ্ব্বদা অসৎচিন্তায় ব্যাপৃত থাকিত, সুতরাং ইংরাজী পুস্তকের প্রতি অটলভাবে মন দিতে পারিতেন না। শিক্ষণ হইল না বটে, কিন্তু জীবনবন্ধুকে তিনি বড় ভালবাসিলেন ।- জীবনবন্ধু সচ্চরিত্র, মিষ্টভাষী, বুদ্ধমান, বশংবদ এবং কৰ্ত্তব্যপরায়ণ। জমীদারী বিষয়-কাৰ্য্যেও তঁহার বুৎপত্তি ছিল। ভবতারণ বাবু তাহার পরামর্শ লইয়া অনেক কাৰ্য্য করিতেন। পল্লীগ্রামে তাহার নিবাস। কিন্তু সেই পল্লীগ্রামের অদূরে শান্তিপুরের তুল্য একটী প্ৰসিদ্ধ গণ্ডগ্ৰাম অথবা ক্ষুদ্র নগর ছিল ; সেই স্থানটী মিউনিসিপাল টাউন নামে বিখ্যাত । সেইখানে মিউনিসিপালিটী ছিল, সেই টাউনে ভবতারণের বাসস্থানটী মিউনিসিপালিটীভুক্ত। ভবতারণ বাবু একজন মিউনিসিপাল কমিশনার ছিলেন । মিউনিসিপালিটীর কাৰ্য্যে তিনি সর্বদাই জীবনবন্ধু মিত্রের সৎপরামর্শ এবং সাহায্য প্ৰাপ্ত হইতেন। তদনুসারে। কাৰ্য্য করিয়া গ্রামবাসিগাণের নিকটে এবং মিউনিসপাল-সভাপতির নিকটে তিনি প্ৰশংসা-ভাজন হইয়াছিলেন । দেড় বৎসরের পর আরও ছয় মাস জীবনবাবু সেঙ্গ স্থানেই থাকিলেন । ক্রমে ক্রমে তিনি ভবতারণের এতদূর বিশ্বাসভাজন হইয়া উঠিলেন যে, জমাদারী-সংক্রান্ত কাৰ্য্যে তঁহাকে নিযুক্ত করিতে ऊँशब्र ইচ্ছা হ’ল। জীবনবন্ধুর নিকটে তিনি সেই ইচ্ছা প্ৰকাশ করলেন। জীবনবন্ধু অসম্মত হইলেন। তিনি কহিলেন, তাহার উকীল হইবার ইচ্ছা আছে, জমীদারী কাৰ্য্যে ব্যাপৃত থাকিলে আইনু অধ্যয়নে ব্যাঘাত ঘটবে, অতএব তিনি এক্ষণে অন্য কোন প্রকার চাকরী স্বীকার করিতে ইচ্ছা করেন না।