পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>のや বঙ্গ-গৌরব বৎসর বয়সে মাতুলের আশ্রয় ত্যাগ করিয়া ভাগ্যান্বেষণে বাহির হইলেন ও একটি অহিফেনের দোকানেণ্ট কাজ সংগ্ৰহ করিয়া লইলেন। কিন্তু তাহাও ভাল না লাগায় তিনি বৈদ্যাবাটীর হাটে পাটের ব্যবসায় আরম্ভ করেন। সেই সময় একবার নৌকাডুবি হইয়া তিনি জলমগ্ন হন, দৈবকৃপায় কোনো প্রকারে তঁহার প্রাণরক্ষা হয়। সেই দুর্ঘটনার পর বরাহনগর নিবাসী রাধানাথ পালের সহিত একযোগে তিনি কলিকাতায় খেংরাপটিতে একখানি মশলার দোকান খুলেন। সেই সময়ে পটলডাঙা নিবাসী গোলোকচন্দ্ৰ নাগের কন্যা গৌরীর সহিত তাহার বিবাহ হয়। বিবাহের পর হইতেই ভাগ্যদেবীও তাঁহার প্রতি সুপ্ৰসন্না হইলেন। তিনি রাধানাথ পালের সহিত ব্যবসায় সংশ্রব ত্যাগ করিয়া মাধবচন্দ্ৰ দাঁর সাহায্যে কলিকাতায় ১২১নং খেংরাপটিতে নিজেই একখানি মশলার দোকান খুলেন। সেই দোকান পরিচালনায় বটকৃষ্ণের অপূর্ব ব্যবসায়-বুদ্ধির পরিচয় পাইয়া মাধবচন্দ্ৰ দাঁ বটকৃষ্ণকে তঁহার ব্যবসায়ের অংশী করিয়া লইয়াছিলেন। এই ব্যবসায়ে তাহার যথেষ্ট অর্থাগম হইতে থাকে ও ১২৬৫ সালে তিনি ১২২নং খোংরাপটিতে একটি ঘর ভাড়া লইয়া বটকৃষ্ণ পাল এন্ড কোম্পানি নাম দিয়া একটি বিলাতি ঔষধের দোকান খুলেন। ইহাই তাহার ভবিষ্যৎ উন্নতির মূল হইয়া দাঁড়ায়। সে সময়ে ইংরেজ পরিচালিত ঔষধের দোকানসমূহেই শুধু বিলাতি ঔষধ বিক্ৰীত হইত। বটকৃষ্ণ কখনও খরিদারদিগকে ঠকাইতেন না ও অতি অল্পমাত্র লাভে সন্তুষ্ট থাকিয়া ঔষধ বিক্রয় করিতেন; সেই জন্য তঁহার দোকানে খরিদারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাইতে থাকে। ক্রমে তাহার জ্যেষ্ঠ পুত্ৰ ভূতনাথ প্রাপ্তবয়স্ক হইয়া পিতার কারবারে যোগদান করেন ও অল্প দিনের মধ্যেই ব্যবসায়ে তঁহাদের অপূর্ব সাফল্য লাভ ঘটে । বর্তমানে বনফিল্ডস লেনে যে সাতখানি বাটীতে৫ তীহাদের ব্যবসায় চলিতেছে, তাহার আরম্ভ ঐ ভাবে একটি ক্ষুদ্র ঘরেই হইয়াছিল। সততার কথা রাষ্ট্র হওয়ায় ইউরোপ ও আমেরিকার সকল খ্যাতনামা ঔষধ-বিক্রেতারাই বটকৃষ্ণ পাল এন্ড কোম্পানিকে তঁহাদের এজেন্ট নিযুক্ত করেন এবং এইরূপে তীহাদের নাম চারিদিকে বিস্তৃতি লাভ করে। ক্রমে তাহারা এদেশে ঔষধ প্ৰস্তুতের ব্যবস্থা করিবার জন্য তঁহাদের দমদমাস্থ সুবৃহৎ বাগানবাটীতে* একটি গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করিয়া বহু দেশীয় গাছগাছড়ার চাষ করিয়া ঔষধ প্ৰস্তুতের কার্য করিতে আরম্ভ করেন। ম্যালেরিয়ার ঔষধ প্ৰস্তুত করিয়া তাহারা একদিকে যেমন যথেষ্ট লাভবান হইয়াছেন, অন্য দিকে তেমনই তদ্বারা দেশেরও যথেষ্ট উপকার হইয়াছে। এখনও প্রতি রবিবার তীহাদের শোভাবাজারস্থ বাসগৃহ এবং দমদমান্থ বাগানবাটী হইতে ম্যালেরিয়ার ঔষধ বিতরিত হইয়া থাকে। অ্যালোপ্যাথিক ঔষধ বিক্রয়ের সঙ্গে সঙ্গে উক্ত কোম্পানি কয়েকটি হােমিওপ্যাথিক ঔষধের দোকান এবং কবিরাজি ঔষধের দোকানও৭ প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন। বটকৃষ্ণ পাল মহাশয়ের চরি পুত্রের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ভূতনাথ পাল ও মধ্যম হরিপদ পােল পরলোকগত হইয়াছেন, তৃতীয় পুত্র স্যার হরিশঙ্কর পাল ও চতুর্থ পুত্র হরিমোহন পাল এখনও প্রত্যহ তঁহদের ব্যবসায়