পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আশুতোষ মুখোপাধ্যায় 8s ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে আশুতোষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর হন। তারপর ক্রমাগত আট বৎসর কােল তিনি এই পদে নিযুক্ত ছিলেন। আরও একবার দুই বৎসরের জন্য তিনি উক্ত পদ গ্রহণ করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় লইয়া আশুতোষ গভর্নমেন্টের সহিত যুদ্ধ করিতেও দ্বিধা বোধ করেন নাই এবং এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আশুতোষই পুনঃপুন জয়ী হইয়াছেন। আশুতোষের চলাফেরা বাহুল্যবর্জিত ছিল। বিলাস তাহাকে কখন স্পর্শও করিতে পারে নাই। ধুতি এবং জিনের কোিটই ছিল তাহার সাধারণ পরিচ্ছদ। এই পরিচ্ছদেই সজ্জিত হইয়া তিনি বড় বড় সভা-সমিতিতে যোগদান করিতেন। কিন্তু এই বাহুল্য-বর্জিত দেহটার ভিতর দুর্জয় সাহস ছিল, অসাধারণ আত্মসম্মানজ্ঞান ছিল। তঁহার আত্মসম্মানের একটা উদাহরণ দিতেছি। কমিশন” নামে একটি বৈঠক বসিয়াছিল। আশুতোষ এই বৈঠকের একজন সদস্য নিযুক্ত হইয়াছিলেন। সদস্যেরা মহীশূরের শিক্ষাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য যখন মহীশূর গমন করিয়াছিলেন, তখন সেখানকার মহারাজা একটি সান্ধ্যাভোজের আয়োজন করেন। সন্ধ্যার একটু আগে সাদা ধুতির উপর সাদা জিনের কোিট পরিধান করিয়া আশুতোষ ভোজসভায় উপস্থিত হইলেন। কিন্তু তাঁহার মােটর থামিতেই মহীশূর রাজার প্রাইভেট সেক্রেটারি র্তাহার কাছে আসিয়া কহিলেন-“খালি মাথায় মহারাজের সম্মুখে যাইবার নিয়ম নাই। তাই আপনার জন্য একটি পাগড়ি আনিয়াছি, মহারাজের কাছে। যাইবার সময় এইটি মাথায় পরিয়া যাইবেন।” প্রাইভেট সেক্রেটারির ধৃষ্টতায় আশুতোষের মন জুলিয়া উঠিল। তিনি তাড়াতাড়ি মোটর-চালককে মোটর ফিরাইতে আদেশ দিয়া বলিলেন-“পাগড়ি আমি জীবনে কখনও পরি নাই, এখানেও পরিতে পারিব না। সুতরাং আপনাদের নিমন্ত্রণ আমি প্রত্যাখ্যান করিলাম।” মহারাজ ব্যাপারটি জানিতে পারিয়া যুবরাজকে পাঠাইয়া দিয়া আশুতোষকে ফিরাইয়া আনিয়াছিলেন। দুবিনীত প্ৰাইভেট সেক্রেটারিকেও বিশেষ লাঞ্ছনা ভোগ করিতে হইয়াছিল। আশুতোষের তেজস্বিতার বহু প্রমাণ আছে। সম্রাট এডুওয়ার্ডের” অভিষেকের সময় বড়লাট কার্জন ১১ সাহেব আশুতোষকে বিলাত যাইবার জন্য নিমন্ত্রণ করেন। নিমন্ত্রণ পাইয়া আশুতোষ বড়লাটকে জানাইলেন যে, তাহার মাতার ইচ্ছা নয় যে তিনি বিলাত যান। নিমন্ত্রণ এই ভাবে প্রত্যাখ্যান করিতে দেখিয়া বড়লাট রুষ্ট হইলেন। তিনি উগ্রভাবে লিখিলেন-“আপনার মাকে বলিবেন ভারতের রাজপ্রতিনিধি কার্জন সাহেবের হুকুম, র্তাহার পুত্ৰকে অভিষেকে যোগ দিবার জন্য বিলাত যাইতেই হইবে।” এরূপ ব্যবহার সহ্য করা আশুতোয্যের স্বভাব-বিরুদ্ধ। তিনি তৎক্ষণাৎ লাট সাহেবকে জানাইলেন- “এ কথার উত্তরে আমার মা কি উত্তর দিবেন তাহা আমি জানি। তিনি বলিবেন—"লােট সাহেবই হােন। আর রাজ-প্রতিনিধিই হােন, আমার ছেলেকে আমার বা غسسة هدية