পাতা:বঙ্গ গৌরভ - জলধর সেন.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Գ Տ বঙ্গ-গৌরব চালাইয়া লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করিতে পারিতেন। কিন্তু মনে প্ৰাণে খাঁটি বৈজ্ঞানিক বলিয়াই তিনি দিনের পর দিন কেবল কাজ করিয়া চলিয়াছেন-অর্থে পার্জনের দিকে র্তাহার দৃষ্টি নাই। অথচ তঁহারই গবেষণার ফল নিজেদের কাজে লাগাইয়া অনেক লোক ঐশ্বর্যশালী হইয়া উঠিতেছে। জগদীশচন্দ্ৰ তাহার বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য কলিকাতায় যে ‘বসু-বিজ্ঞান-মন্দির” প্রতিষ্ঠিত করিয়াছেন, তাহা তাহার জীবনের একটি বিশেষ কীর্তি। বিজ্ঞানের উন্নতি এবং জ্ঞানের বিস্তৃতি সাধনই ইহার প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্দেশ্য। ভাল পরীক্ষাগার এবং যন্ত্রপাতির অভাবে জগদীশচন্দ্ৰকে প্রথম জীবনে বহু কষ্ট ও অসুবিধা ভোগ করিতে হইয়াছিল। এই বিজ্ঞানাগার প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানানুসন্ধিৎসুদের পথ হইতে সে অসুবিধা অনেকটা দূর হইয়াছে। জগদীশচন্দ্র এ পর্যন্ত যাহা কিছু আবিষ্কার করিয়াছেন তাহার সমস্তগুলির পরিচয় প্ৰদান এত অল্প পরিসরের মধ্যে সম্পূর্ণ অসম্ভব। সম্প্রতি তিনি আরও অনেকগুলি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার করিয়া বৈজ্ঞানিক জগৎকে স্তম্ভিত করিয়া দিয়াছেন। তাহার এই আবিষ্কার যে বৈজ্ঞানিক জগতে সত্য সত্যই একটা নূতন যুগ আনিয়া দিয়াছে, তাহাতে আর সন্দেহ নাই। জগদীশচন্দ্রের আবিষ্কারের ফলে ভারত আজ জগতের কাছে নূতন সম্মান লাভ করিতে সমর্থ হইয়ছে। ভারতবর্ষই একদিন সমস্ত জগতের জ্ঞানের সাধনা-ক্ষেত্র ছিল। কিছুদিন পূর্বে তাহার সে গৌরব নষ্ট হইয়াছিল। কিন্তু এই সকল মনীষীর জ্ঞান-সাধনা দেখিয়া মনে হয়, আবার সেদিন ফিরিয়া আসা অসম্ভব নয়, যখন ভারতের পদতলে বিপুল বিশ্ব জ্ঞানার্জনের জন্য সম্মিলিত হইবে।