পাতা:বনে পাহাড়ে - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s यन-श्राश्रद्ध মোটরে চাইবাসা ফিরবার পথে আমরা জল্পনা-কল্পনা করলাম, একটা জ্যোৎস্না রাত দেখে। শীগগির আবার একদিন ঐ পাহাড়টাতে এসে পিকনিক করতে হবে। বড় সুন্দর প্রান্তর, বড় সুন্দর পাহাড়টি। এ ধরনের জল্পনা অনেকক্ষেত্রে অনেক বার হয়, কিন্তু আর কাৰ্য্যে পরিণত হয় না। কোনো ভাল জায়গায় বেড়িয়ে ফিরবার পথে মনে হয়—’ও, এই তো। এখানে আবার কতবার আসবে, এই এতে কাছে! কিন্তু ওই পৰ্য্যন্তই। যাওয়া আর ঘটে না । এখানেও তাই। সেরাইকেল ভ্রমণের পরে দু বছর কেটে গিয়েছেঅথচ সেই নির্জন শৈল সন্দর্শনের সৌভাগ্য। আর কখনো ঘটেনি অামাদের } চক্ৰধরপুর থেকে রাচীর পথে বিখ্যাত হিডনি জলপ্রপাত। অনেকদিন থেকে আমাদের দেখবার ইচ্ছে ছিল । গত বৎসর ভাদ্র মাসে ( ১৩৫০ সালের ভাদ্র ) আমি ঘাটশিলা থেকে সাহিত্যসভা উপলক্ষে চাইবাসা যাই । সভা শেষ হোল রাত দশটায়। গুমটি গরম। আমরা মিঃ সিনহার বাড়ী আহারাদি সেরে অনেক রাত পৰ্য্যন্ত কোলহান পার্কের বেঞ্চিতে বসে গল্পগুজব করলাম । কোলহান পার্ক চাইবাস টাউনের একটা সম্পদ বলে মনে করি । মস্ত বড় পুকুর, পুকুরের ধারে ফুলের বাগান, হু হু করচে জলের হাওয়া, ভুর ভুর করচে হাসানুহানার সুবাস বাতাস, ফুটফুটে শরতের জ্যোৎস্না, নিৰ্ম্মেঘ আকাশ। বন্ধুদের মধ্যে কেউ আবৃত্তি করচেন, কেউ গান করচেন, রাত যে কত হয়েচে সেদিকে কারো খেয়াল নেই। হঠাৎ বন্ধুবর সুবোধ ঘোষ বল্লেন-চলুন, শোওয়া যাক গে, রাত বোধ হয় বারোটা একটা হয়ে গেল- w বাস্তবিক সে একটা অদ্ভুত রাত্ৰি কাটিয়েচি কোলহান পার্কের জলের ধারে পাথরের বেঞ্চিতে। পাঁচ ছ’জন বন্ধুবান্ধব, সবাই মিলে গানে গল্পে কোন দিক থেকে সময় কেটে গেল, ঘুমোবার ইচ্ছে নেই করে ।