পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম অধ্যায়-চড়চড়ী।
৯৩

১০৯। সরিষা-ইলিশ বা ইলিশ মাছের সরিষাবাটা ঝোল

 ইহা বরেন্দ্রের একটি অতি বিখ্যাত ব্যঞ্জন। ইহা খাঁটী চড়চড়ী হইলেও ঝোল ঝোল করিয়া রাঁধা হইয়া থাকে। এই নিমিত্ত ইহাকে ইলিশ মাছের সরিষাবাটা ঝোল বলা হইয়া থাকে।

 (ক) ইলিশ মাছ পেটী গাদায় বিভক্ত করতঃ একটু পুরু পুরু খণ্ডে কুটিয়া লও। নুণ হলুদ মাখ। তৈলে তেজপাত, মেথি, (কালজিরা,) লঙ্কা ফোড়ন দিয়া মাছ ছাড়। সামান্য মাত্র আংসাইয়া লইয়াই নুণ হলুদ ও কিঞ্চিৎ শুক্না লঙ্কা বাটা দিয়া জল দাও।

 ইলিশ মাছ অধিক কষাইলে বা আংসাইলে যে বিস্বাদ হইয়া যায় ইহা লিখাই বাহুল্য। অনেকে এই ভয়ে মাছ আদৌ না আংসাইয়া ফোড়নের পর জল দিয়া ফুটিলে তখন তাহাতে কাঁচা ইলিশ মাছ ছাড়েন। আমার মনে হয় ইলিশ মাছ একটু পুরু করিয়া কুটিয়া তেলে অল্প আংসাইয়া লইয়া পাক করিলে তাহার আস্বাদনই বরং উত্তম হয়। তবে পাত্‌লা করিয়া কুটা ইলিশ মাছ না আংসাইয়া ঝোলে কাঁচা ছাড়াই কর্ত্তব্য।

 গোটাকয়েক কাঁচা লঙ্কা চিরিয়া লইয়া ছাড়। মাছ সিদ্ধ হইলে সরিষা বাটা (অথবা বিলাতী রাই সরিষার গুঁড়া জলে গুলিয়া) মিশাও। অভিরুচীমত ঝোল ঈষৎ গাঢ় বা অপেক্ষাকৃত অধিক গাঢ় করিয়া নামাও।

 (খ) মাছ কুটিয়া কাঁচা অবস্থাতেই নুণ, হলুদ, লঙ্কা বাটা ও সরিষা বাটা দিয়া মাখ। তৈলে লঙ্কা, মেথি, কালজিরা বা শুধু কালজিরা ফোড়ন দিয়া মাখা মাছ ছাড়। উল্‌টাইয়া পাল্‌টাইয়া অল্প আংসাইয়াই জল দাও। সাবধান বেশী আংসাইও না তাহা হইলে স্বাদ তিত হইবে। কাঁচা লঙ্কা চিরিয়া ছাড়। সিদ্ধ হইয়া ঝোল গাঢ় হইলে নামাও। কেহ কেহ ইহাতে কিছু পিটালী দিয়া ঝোল গাঢ় করিয়া থাকেন।