পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
left
অষ্টম অধ্যায়—সূপ।
১৩৮

ছোবা সুতরাং কুভক্ষ্য। এই নিমিত্তই বঙ্গদেশীয় রন্ধনে যাবতীয় ব্যঞ্জন প্রথমে উত্তপ্ত ঘৃতে বা তৈলে কষাইয়া বা আংসাইয়া (সাঁৎলাইয়া) লইয়া তবে তাহা প্রয়োজন মত অধিক জলে সিদ্ধ করা হয়। এই নিমিত্ত তখন কাঁচা জল দিলেও পূর্ব্বে কষান থাকা প্রযুক্ত আনাজ মৎস্যাদির স্বাদের ব্যত্যয় বা বিকৃতি ঘটে না। তত্রাচ মাংসের ‘কালিয়া’ রন্ধনে পুনঃ উত্তপ্ত জল দিবার ব্যবস্থা আছে। ইলিশাদি তৈলাক্ত কোমল মৎস্য রন্ধনে যদিও তৈলাদিতে মৎস্য না কষাইয়া কাঁচা মাছই একছের জলে ছাড়িবার ব্যবস্থা আছে, কিন্তু ঐ জল সম্যক না ফুটিলে তাহাতে মৎস্য ছাড়া নিষিদ্ধ।

 অস্মদ্দেশে এক রোগীর পথ্য ব্যতীত সচরাচর মৎস্য মাংসাদির সূপ রাঁধা হয় না সম্ভবতঃ তন্নিমিত্ত কেবল ডাইলের সূপই ‘সূপ’ আখ্যা প্রাপ্ত হইয়াছে।

খেচরান্ন বা খিঁচুড়ি।

 চাউলে ও ডাইলে এক সঙ্গে নুণ ও হলুদ যোগে সিদ্ধ করিয়া পরে ঘৃতে জিরা, তেজপাত, লঙ্কা ফোড়ন দিয়া সম্বারা দিয়া লইলেই খিঁচুড়ি পাক হইল।

 খিঁচুড়ি মোটামুটি দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা যাইতে পারে। ঢালা খিঁচুড়ি ও ভুনি (ভাজা) খিঁচুড়ি। উপরে যাহা লিখা হইল, তাহা ঢালা খিঁচুড়ি সম্বন্ধে। ভুনি খিঁচুড়িতে ঘৃতে তেজপাত, (জিরা, লঙ্কা) ও গরম মশল্লাদি ফোড়ন দিয়া ডাইল ছাড়িয়া পূর্বে আংসাইয়া অর্থাৎ ভাজিয়া লইতে হয়। তৎপর চাউল ছাড়িয়া এবং পশ্চাৎ জল ঢালিয়া দিয়া নুণ (হলুদ) সহ সিদ্ধ করতঃ জল শুকাইয়া লইলেই ভূনি খিঁচুড়ি পাক হইল।

 সাধারণতঃ বালুতে ভাজা মুগ বা মাষকলাইর ডালের খিঁচুড়িই উত্তম বিবেচিত হইয়া থাকে। মশুরি এবং অরহর ডালেরও খিঁচুড়ি হইয়া থাকে। জিরা, তেজপাত, লঙ্কা ফোড়ন ব্যতিরেকে পেঁয়াজ, রশুন অথবা হিঙ এবং