তেমনি কচি ছাঁচী কুমড়া অথবা বুড়া শশার ঘণ্ট রাঁধিলে অতি উপাদেয় হয়। রুই মাছের সহিত কিন্তু কুমড়া অথবা শশার ঘণ্ট আদৌ মজে না।
কচি ছাঁচী কুমড়া অথবা বুড়া দেখিয়া শশা লইয়া মিহি করিয়া কুট। ইলিশ মাছের মুড়া-কাঁটা নুণ হলুদ মাখিয়া কষিয়া রাখ। সম্ভবপর হইলে ঐ তেলেই জিরা, তেজপাত ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া কুমড়া অথবা শশা ছাড়। ইচ্ছা করিলে কুমড়া ও শশা একত্রে মিশাইয়াও ইলিশ মাছের সহিত ঘণ্ট রাঁধিতে পার। উত্তমরূপে আংসাও। নুণ, হলুদ দিয়া জল দাও। ফুটিলে কষান মাছ ছাড়। সিদ্ধ হইলে মাছ ভাঙ্গিয়া দিয়া সব বেশ করিয়া ঘাঁটিয়া মিশাইয়া দাও। বাটা ঝাল (ধনিয়া বাটা বাদ দিতে পার) মিশাও। শুকাইলে পিঠালী দিয়া আঁটিয়া নসনসে করিয়া নামাও।
ইলিশ মাছের ‘ঘণ্টে’ আনাজের পরিমাণে মাছের ভাগ কম থাকিয়া শুধু মুড়া-কাঁটাতেই বেশ চলে, কিন্তু ‘ভাঙ্গায়’ সরিষার তেল ও মাছের ভাগ একটু বেশী থাকিলে তবে তাহা খাইতে সুস্বাদু হয়।
১৮৪। ইলিশ মাছের সহিত কচু-ডাঁটীর ঘণ্ট
কচুশাকের মাইঝ পাতা ও কচি পাতার ডাঁটী লইয়া ছোট ছোট করিয়া কুট। ভাপ দিয়া জল গালিয়া ফেল। ইলিশ মাছের মুড়া-কাঁটা নুণ, হলুদ মাখিয়া কষাইয়া রাখ। তৈলে জিরা, কালজিরা, তেজপাত ও লঙ্কা ফোড়ন দিয়া কচু-ডাঁটী ছাড়। আংসাও। নুণ, হলুদ দিয়া অল্প জল দাও। ফুটিলে কষান মাছ ছাড়। সিদ্ধ হইলে মাছ ভাঙ্গিয়া দিয়া উত্তমরূপে সব ঘাঁটিয়া মিশাইয়া দাও। বাটা ঝাল মিশাও। পরে পিঠালী দিয়া আঁটিয়া নসনসে করিয়া নামাও।
বরেন্দ্রে বর্ষাকালে বিবাহাদি ব্যাপারের ভোজে এই কচু-ঘণ্ট অন্নের সহিত পরিবেশন করা হইয়া থাকে।
না’লের সহিত ইলিশ মাছ মিশাইয়া এই প্রকারে ঘণ্ট রাঁধা চলিবে।