পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/১৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৮
বরেন্দ্র রন্ধন

উহা ব্যঞ্জনে পড়িয়া থাকে, সুতরাং পুনঃ উহা কাটখোলায় বা ঘৃতে ভাজিয়া লইয়া মিশাইলে ব্যঞ্জনের স্বাদের আর কিছুমাত্র উন্নতি হয় না। গোলমরিচ কাট-খোলায় বা ঘৃতে ভাজিয়া দিলে তাহার স্বাদেরও ব্যত্যয় ঘটে।

 আর একটি বিষয় লক্ষ্য করিতে হইবে, কাঁচা জিরা-মরিচ বাটা এবং কাটখোলায় ভাজা ধনিয়া, লঙ্কা প্রভৃতি ঝাল ব্যঞ্জন রন্ধন শেষ হইয়া তাহা নামাইবার অব্যবহতি পুর্ব্বে বা পরে মিশান কর্ত্তব্য। কেন না অধিকক্ষণ সিদ্ধ করিলে কাঁচা জিরা-মরিচ বাটার সুবাস এবং ভাজা ধনিয়া, লঙ্কা প্রভৃতির গুঁড়ায় সুবাস উপিয়া যাইয়া অপচয় ঘটে সুতরাং তদ্দ্বারা ব্যঞ্জন আর যথেষ্ট অনুবাসিত হয় না। অপরন্তু কাটখোলায় ভাজা ঝাল ঘৃতে বা তৈলে আর পুনঃ কষান কর্ত্তব্য নহে, কেন না একবার যাহা ভাজা হইয়াছে পুনর্ব্বার তাহা কষাইলে (ভাজিলে) তাহার সুবাস সম্পূর্ণরূপে উপিয়া যাইয়া কেবল তাহার সিটা মাত্র অবশিষ্ট রহিবে।

 পাকা রুই, চিতল প্রভৃতি মোটা মাছের ‘ঝাল’ রাঁধিতে জিরা-মরিচের ঝাল সহ লঙ্কা, ধনিয়া, তেজপাত, পিপুল এবং রন্ধনী প্রভৃতি সর্ব্ব প্রকারের বাটা ঝাল মিশাইলে তবে আস্বাদন উৎকৃষ্ট হইয়া থাকে। রাঁধনী অবশ্য ভাজিয়া গুঁড়া করিয়া লইয়া সর্ব্বপশ্চাৎ মিশাইতে হয়। নিরামিষ ঝালে এবং অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মৎস্যের ঝালে কেবল মাত্র জিরা-মরিচের বাটা ঝাল মিশাইলেই যথেষ্ট হয়।

 কষান মোটা মাছ অল্পাধিক ভাঙ্গিয়া ঝাল ঘাঁধিলে উত্তম হয়।

 কাৎলা কালবাউস, মৃগেল, মহাশোল, সারঙ্গ পুঁটী প্রভৃতি মোটা মাছ এবং চিতল, আইড়, বোয়াল, ঢাঁই (সিলঙ্গ), গাগর, রিঠা, বাচা প্রভৃতি তৈলাক্ত মোটা মাছ এবং সামুদ্রিক ভেটকী, ভাঙ্গন, সবলী, তুলাদণ্ডী, চাদা (পমফ্রেট), সুর (মেকরেল) প্রভৃতি মাছের এই প্রকারে ঝাল রাঁধা যাইতে