পাতা:বরেন্দ্র রন্ধন.djvu/২০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ অধ্যায়—কালিয়া।
১৮৫

ক্ষুদ্র, এমন কি অর্দ্ধ হস্ত পরিমিতও নহে; ইহাকে ‘কড়ি বা কড়ুই কেঠো’ বলে। ইহা পুকুরে, বিলে বা প্রায় নদীর স্থির জলে পাওয়া যায়। ইহারাও উদ্ভিদাহারী, ইহাও খাওয়া যায়। এই শেষোক্ত উভয় কেঠো আঁষটে গন্ধ বিশিষ্ট নহে।

 কেঠো কুটা কিছু শক্ত। ইহারা মস্তক বাহির করিলে ধাঁ করিয়া তাহা কাটিয়া ফেলিবে, কেন না সামান্য ভয় পাইলেই ইহারা মস্তক লুকাইয়া ফেলে। অতঃপর কেঠো চিৎ করিয়া ফেলিয়া বুকের খোলার ধার দিয়া একখানি সূঁচাল ডগা বিশিষ্ট হাত-দা’র দ্বারা ঠুকিয়া ঠুকিয়া বুকের খোলাটি কাটিয়া উঠাইয়া ফেলিতে হয়। পরে ধারাল ছুরি দ্বারা ভিতর হইতে মাংস কাটিয়া বাহির করিয়া লইয়া কুটিতে হয়। অনেক কেঠোর পেটে বহু ডিম্ব এবং থলথলে গোছ তেল পাওয়া যায়। কেঠোর ডিম্ব খাইতে পক্ষীর ডিম্ব অপেক্ষা নীরস হইলেও নিতান্ত মন্দ নহে,—সিদ্ধ ডিম্ব একটু বেলে বেলে স্বাদ বিশিষ্ট হয়। কেঠোর তৈলও খাওয়া যায়, কিন্তু ইহার মেটেই খাইতে সর্বাপেক্ষা স্বাদু ও চমৎকার মোলায়েম। কেঠোর কালিয়া পাঁঠার কালিয়ার ন্যায়ই রাঁধিবে। কেঠোতে পেঁয়াজ রশুনের পরিবর্তে হিঙ্ ব্যবহার করিতেই সাধারণত দেখা যায় এবং দধি প্রভৃতিও প্রায় ইহাতে দেওয়া দেখা যায় না। ডিম্বগুলি না কষাইয়া আলাহিদা কাঁচা রাখিয়া দিবে এবং মাংস পাক প্রায় শেষ হইয়া আসিলে তখন তাহাতে ছাড়িবে। ডিম অধিক সিদ্ধ করিলে শক্ত হইয়া অখাদ্য হইয়া যায়।

১২০। পক্ষীর কালিয়া

 ঘুঘু, হরিয়া, পায়রা, বগেড়ী প্রভৃতি ছোট জাতীয় মেঠো পক্ষী; বটের, তিত্তীর, কুক্কুট বন্ধ, কুলাঙ, হুবরা, চিরাত, লিখ, গগনভেড় প্রভৃতি বড় জাতীয় মেঠো পক্ষী; কাম, কচুয়া, ডাহুক, বাটাম প্রভৃতি কালী-খোঁচা জাতীয়