পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বহুবিবাহ।
৯৯

বিবাহের স্পষ্ট বিধি প্রদান করিয়াছেন; এই ত্রিবিধ বিবাহ না করিলে, গৃহস্থ ব্যক্তিকে প্রত্যবায়গ্রস্ত হইতে হয়। তবে, রতিকামনা পূর্ণ করিবার নিমিত্ত, পূর্ব্বপরিণীতা স্ত্রীর সম্মতি গ্রহণ পূর্ব্বক, যে অসবর্ণ বিবাহ করিবার বিধি আছে, কেবল ঐ বিবাহ পুরুষের সম্পূর্ণ ইচ্ছাধীন, অর্থাৎ ইচ্ছা হইলে তাদৃশ বিবাহ করিবেক, ইচ্ছা না হইলে তাদৃশ বিবাহ করিবেক না; তাদৃশ বিবাহ না করিলে, প্রত্যবায়গ্রস্ত হইতে হইবেক না। অতএব, বিবাহমাত্রই পুরুষের ইচ্ছাধীন, ইহা নিতান্ত অকিঞ্চিৎকর কথা। আর, বিবাহবিষয়ে ইচ্ছার নিয়ামক নাই, ইহা অপেক্ষা অসার ও উপহাসকর কথা আর কিছুই হইতে পারে না। পুত্রলাভ ও ধর্ম্মকার্য্য সম্পন্ন হইলে, পূর্ব্বদর্শিত আপস্তম্ববচন দ্বারা পূর্ব্বপরিণীতা স্ত্রীর জীবদ্দশায় পুনরায় সবর্ণা বিবাহ করা একবারে নিষিদ্ধ হইয়াছে; সুতরাং, সে অবস্থায় ইচ্ছানুসারে পুনরায় বিবাহ করিবার অধিকার নাই। তবে, রতিকামনাস্থলে অসবর্ণাবিবাহ পুরুষের ইচ্ছার অধীন বটে; কিন্তু সে ইচ্ছারও নিয়ামক নাই এরূপ নহে; কারণ, পুর্ব্বপরিণী স্ত্রী সম্মত না হইলে, কেবল পুরুষের ইচ্ছায় তাদৃশ বিবাহ হইতে পারে না। অতএব বিবাহবিষয়ে পুরুষ সম্পূর্ণ স্বতন্ত্রেচ্ছ, যত ইচ্ছা হইবেক, তত বিবাহ করা উচিত, ঈদৃশ অদৃষ্টচর অশ্রুতপূর্ব্ব ব্যবস্থা তর্কবাচস্পতি মহাশয় ভিন্ন অন্য পণ্ডিতম্মন্য ব্যক্তির মুখ বা লেখনী হইতে নির্গত হইতে পারে, এরূপ বোধ হয় না। প্রথমতঃ, তর্কবাচস্পতি মহাশয় শাস্ত্রবিষয়ে বহুদর্শী বলিয়া খ্যাতিলাভ করিয়াছেন বটে; কিন্তু ধর্ম্মশাস্ত্রে তাঁহার তাদৃশ অধিকার নাই; দ্বিতীয়তঃ, তিনি স্থিরবুদ্ধি লোক নহেন; তৃতীয়তঃ, ক্রোধে অন্ধ হইয়াছেন, তাহাতে তাঁহার বুদ্ধিবৃত্তি অতিশয় কুলুষিত হইয়া রহিয়াছে। এই সমস্ত কারণে, বিবাহবিষয়ক বিধিবাক্যসমূহের অর্থনির্ণয় ও তাৎপর্য্যগ্রহ করিতে না পারিয়া, এবং কোনও কোনও স্থলে, বহু জায়া, বহু ভার্য্যা, অথবা