পাতা:বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার - দ্বিতীয় পুস্তক.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
বহুবিবাহ।

তাহা হইলে বিধিবাক্যোক্ত বিষয় বিহিত হইল না; যদি বিহিত না হইল, তাহা হইলে উহা কর্ত্তব্য বলিয়া পরিগৃহীত হইতে পারে না। “পঞ্চ পঞ্চনখা ভক্ষ্যাঃ,” পাঁচটি পঞ্চনখ ভক্ষণীয়, এই বিধিবাক্যে যে পঞ্চ পঞ্চনখের উল্লেখ আছে, পরিসংখ্যাবিধিদ্বারা তদ্ব্যতিরিক্ত পঞ্চনখের ভক্ষণনিষেধ প্রতিপাদিত হইতেছে, শশ প্রভৃতি পঞ্চ পঞ্চনখের ভক্ষণবিধান ঐ বিধিবাক্যের উদ্দেশ্য নহে; সুতরাং, শশ প্রভৃতি পঞ্চ পঞ্চনখের ভক্ষণ বিহিত হইতেছে না। সেইরূপ, মনুবচনে কামার্থ বিবাহের যে বিধি আছে, ঐ বিধির পরিসংখ্যাত্ব স্বীকার করিলে, অসবর্ণাব্যতিরিক্তস্ত্রীবিবাহনিষেধ সিদ্ধ হইবেক, অসবর্ণাবিবাহবিধান ঐ বচন দ্বারা প্রতিপাদিত হইবেক না; যদি তাহা না হইল, তাহা হইলে অসবর্ণাবিবাহ বিহিত হইল না; যদি বিহিত না হইল, তাহা হইলে অসবর্ণাগর্ভজাত সন্তান অবৈধস্ত্রীসংসর্গসম্ভূত হইল; সুতরাং, ঔরস অর্থাৎ বৈধ সন্তান বলিয়া পরিগৃহীত হইতে পারে না। তর্কবাচস্পতি মহাশয় এস্থলে পরিসংখ্যবিধির যেরূপ সূক্ষ্ম তাৎপর্য্যব্যাখ্যা করিয়াছেন, তাহা অদৃষ্টচর ও অশ্রুতপূর্ব্ব। লোকের ইচ্ছা দ্বারা যাহার প্রাপ্তি ঘটে, তাহাকে রাগপ্রাপ্ত বলে, তাদৃশ বিষয়ের প্রাপ্তির নিমিত্ত বিধির আবশ্যকতা নাই। যদি বিধি থাকে, তাহা হইলে, বিহিত বিষয়ের অতিরিক্ত স্থলে নিষেধ সিদ্ধ হয়; অর্থাৎ যদিও তাদৃশ সমস্ত বিষয় ইচ্ছাদ্বারা প্রাপ্ত হইতে পারে; কিন্তু কতিপয় স্থল ধরিয়া বিধি দেওয়াতে, কেবল ঐ কয় স্থলে ইচ্ছানুসারে চলিবার অধিকার থাকে, তদতিরিক্ত স্থলে নিষেধ বোধিত হয়। পঞ্চনখ ভক্ষণ রাগপ্রাপ্ত; কারণ, লোকে ইচ্ছা করিলেই তাহা ভক্ষণ করিতে পারে; সুতরাং, তাহার প্রাপ্তির জন্য বিধির আবশ্যকতা নাই। কিন্তু শশ প্রভৃতি পঞ্চ পঞ্চনখের নির্দ্দেশ করিয়া ভক্ষণের বিধি দেওয়াতে, ঐ পাঁচ স্থলে ইচ্ছানুসারে ভক্ষণের অধিকার থাকিতেছে; তদতিরিক্ত