পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৩০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
২৭৪

আতঙ্ক করে কোন লাভ নেই। দরকার হলে যারা উপনিবেশ করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে একথা বলে আমার বক্তব্য শেষ করছি।

 শ্রী মহম্মদ সামায়ুন বিশ্বাস: মাননীয় ডেপুটি স্পীকার মহাশয়, মুখ্যমন্ত্রী মহাশয় বাংলাদেশের নির্যাতিত সাড়ে সাত কোটি জনসাধারণের সমর্থন এবং তাদের সর্বপ্রকার সাহায্য করার জন্য যে প্রস্তাব এনেছেন মুসলিম লীগের তরফ থেকে আমি সেই প্রস্তাবকে আন্তরিকভাবে সমর্থন জানাচ্ছি। বলা বাহুল্য ইণ্ডিয়ান ইউনিয়ন অব মুসলিম লীগের সভাপতি জনাব কায়েদেমুল্লা ইসমাইল সাহেব এবং পশ্চিম বাংলা রাজ্য মুসলিম লীগের সভাপতি সেকেন্দার আলি মোল্লা বাংলদেশের নিপীড়িত লোকের সমর্থনে এক যুক্ত বিবৃতি দিয়েছেন। খুবই পরিতাপের বিষয় সংবাদপত্রগুলি এই মুসলিম লীগের প্রতি বৈমাতৃসুলভ আচরণ করেন এবং সেইজন্যই বিরোধীপক্ষ অনেক কথা সোচ্চারে বলেছেন। আর একটা কথা বলছি, যখন আমরা এই গভর্নমেণ্টের অংশীদার তখন মুখ্যমন্ত্রী মহাশয় যে প্রস্তাব এনেছেন তাকে সমর্থন না করার প্রশ্ন কি উঠতে পারে? কাজেই আমরা এই প্রস্তাব সমর্থন করছি। এই প্রসঙ্গে আমি জ্যোতিবাবুকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করতে চাই। তিনি যে কিছুদিন আগে কমিউনিষ্ট দেশগুলি ঘুরে এলেন সেখানে তিনি এই বাংলাদেশের নিপীড়িত লোকদের জন্য কোন বক্তব্য রেখেছেন কি? অথবা বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন করবার জন্য কোন সক্রিয় ভুমিকা নিতে বলেছেন কিংবা সরাসরি তিনি কোন বক্তব্য রেখেছেন কি? এই পর্যন্ত সংবাদপত্র পড়ে যা দেখেছি তাতে তিনি সেইরকম কোন বক্তব্য রাখেননি। কাজেই এখানে এক রকম কথা বললেন এবং অন্যভাবে শলা-পরামর্শ করবেন এটা বিস্ময়কর। দ্বিতীয় কথা মুসলিম লীগ সম্বন্ধে একটা চার্জ এনেছেন। পরিতাপের বিষয় যে, আমরা বারবার বলেছি যে, মুসলিম লীগ সাম্প্রদায়িক দল নয়, আসলে মুসলিম লীগের জন্ম হয়েছে তাদের প্রতি বৈমাতৃসুলভ আচারণ দেখাবার ফলে। যদি নিরপেক্ষ দৃষ্টি থাকত তাহলে হয়ত এই মুসলিম লীগের জন্ম হত না। আমরা নব কংগেসকে সমর্থন জানিয়েছি সত্য। যখন জাতীয় কংগ্রেস যুক্ত ছিল তখন তাদের প্রতি আমাদের আস্থা ছিল না। তাদের মধ্যে বৈমাতৃসুলভ আচরণ ছিল এটা অত্যন্ত বেদনার কথা। তাই তাদের পাশে আমরা দাঁড়াতে পরিনি। আজকে আমরা নব কংগ্রেসকে সমর্থন জানিয়েছি - কারণ তাদের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য যে, যখন যুক্তফ্রণ্ট সরকার বার বার সরকার গঠন করেছেন তখন তারা এই সমস্ত মুসলিমদের প্রতি দৃষ্টি দেয়নি। তখন তারা ছলে বলে কৌশলে অন্য কথা বলেছেন। তারা সাম্প্রদায়িক চার্জ এনে অনেক কথা বলেছিলেন। তখন তারা কৌশলে অন্য কথা বলেছেন। আপনারা যেভাবে ব্যঙ্গ করে বা কুৎসা করে চলেছেন তাতে জনকল্যাণ হওয়া শক্ত। আপনাদের এই কি প্রতিযোগিতার পরিচয়? কেরলে যখন মুসলিম লীগের সঙ্গে কমিউনিস্ট দল জোট বেঁধেছিল তখন কি মুসলিম লীগ সাম্প্রদায়িক দল ছিলন না? তখন যদি না হয়ে থাকে তাহলে নব কংগ্রেসের সঙ্গে মিলিত হল বলে তারা সাম্প্রদায়িক হল কি করে। আজকে বাংলাদেশের জনগন হিন্দু মুসলমান এক মনে এক প্রানে আমাদের কাছে সাহায্য চাচ্ছে এবং সেই সাহায্যের ভিত্তিতে আমরা যে প্রস্তাব কার্যকরী করবার জন্য আমরা এক মন এক প্রাণ হয়েছি।

(গোলমাল)

 আজ যদি চীন হুমকি দেয় তাহলে জ্যোতিবাবু কি আগিয়ে যাবেন না, না পিছিয়ে যাবেন? আর একটা প্রশ্ন রাখছি যে, প্রতিদিনের আমাদের সমস্যা আছে, আমদের সকলেরই সমস্যা আছে এবং এই সমস্যা থাকা সত্বেও আমি এই স্বীকৃতি জানিয়ে আমি বিদায় নিচ্ছি।

 শ্রী মহম্মদ আমিন: মাননীয় ডেপুটি স্পীকার মহোদয়, বাংলাদেশের বিষয়ে যে প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রী এনেছেন তা আমি সমর্থন করছি এবং সমর্থন করতে গিয়ে একটি মন্তব্যের প্রতি আমি লক্ষ্য রাখছি। একটু আগে শুনলাম কংগ্রেস বেঞ্চ থেকে কেউ বললেন যে, কমিউনিষ্ট লিডারের বাড়িতে নাকি সি আর পি পাহারা দেবার জন্য। তিনি কোথা থেকে জানালেন জানি না। তবে শুনে মনে হল যে, কংগ্রেস হলেই কি মিথ্যা কথা না বললে হয় না? এই রকম একটা কথা তাঁরা বললেন কি করে? আমি বলতে পারি যে কোন সি পি এম লিডারের বাড়িতে কোন সি আর পি নাই। একথা সম্পূর্ণ অসত্য। দ্বিতীয়তঃ এখানে অনেক মাননীয় সদস্যের কথা