পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (সপ্তম খণ্ড).pdf/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

213 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : সপ্তম খণ্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৯৫। পিকিংএ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল দৈনিক পাকিস্তান ৬ নভেম্বর, ১৯৭১ পিকিং-এ উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি হিসেবে ভুট্টো নেতৃত্ব করছেন উপমহাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে (সালামত আলী প্রেরিত) ইসলামাবাদ, ৫ই নভেম্বর। - জনাব জুলফিকার আলী ভুট্টোর নেতৃত্বে আট সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল আজ সকালে একটি বিশেষ বিমানযোগে এখান থেকে চীন রওয়ানা হয়ে গেছেন। দু'দেশের মধ্যে অব্যাহত আলোচনার অংশ হিসেবে গণচীনের আমন্ত্রণক্রমে এই প্রতিনিধিদল চীনে গেছেন। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের প্রতিনিধি হিসেবে জনাব ভুট্টো দলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। কয়েকদিনব্যাপী চীনে অবস্থানকালে প্রতিনিধিদলটি প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই ও অন্যান্য নেতা ও মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন বলে জানা গেছে। পিপিপির চেয়ারম্যান জনাব জুলফিকার আলী ভুট্টো ছাড়াও প্রতিনিধিদলে রয়েছেন পাকিস্তান বিমান বাহিনীর প্রধান সেনাপতি এয়ার মার্শাল এ রহিম খান, পররাষ্ট্র সেক্রেটারী জনাব সুলতান মোহাম্মদ খান, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চীফ অব জেনারেল ষ্টাফ লেঃ জেনারেল গুল হাসান খান, পাকিস্তান নৌবাহিনীর চীফ অব ষ্টাফ রিয়ার এডমিরাল রশীদ, পররাষ্ট্র দফতরের দুজন ডিরেক্টর জেনারেল জনাব আফতাব আহমদ খান ও জনাব তবারক হোসেন এবং পররাষ্ট্র দফতরের ডিরেক্টর জনাব আহমদ কামাল। অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সেক্রেটারী জনাব এম এ আলভী এখানে সংবাদিকদের উক্ত তিনিধিদলের চীন রওয়ানা হওয়ার বিষয়টি জানান। জনাব আলভী প্রতিনিধিদলটিকে অত্যন্ত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, পাকিস্তান ও গণচীনের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনার ব্যবস্থা রয়েছে এবং এই অব্যাহত রীতির ভিত্তিতেই প্রতিনিধিদলটি পিকিং রওয়ানা হয়েছেন। তিনি বলেন যে, প্রতিনিধিদলটির সঙ্গে চীনের নেতাদের উভয় দেশের পারস্পরিক স^:ার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় এবং উপমহাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে । প্রতিনিধি দলটি যেভাবে গঠন করা হয়েছে তাতে অস্ত্র আনার জন্য সেটি যাচ্ছে এরুপ আভাস রয়েছে কিনা এই মর্মে এক প্রশ্নর জবাবে তিনি বলেন যে, চীন থেকে অস্ত্র সরবরাহ করাটা কোন নতুন কিছু হবে না। তিনি বলেন, যে ধরনের সহযোগিতা রয়েছে তা আপনাদের ভালই জানা আছে। এই প্রতিনিধিদলের চীন যাত্রা একাধিক কারণে তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমতঃ সম্প্রতি ভারত ও সোভিয়েট ইউনিয়নের মধ্যে একটি সামরিক চুক্তি রয়েছে এবং ভারত ইতিমধ্যেই রাশিয়া থেকে আরো অস্ত্র ও সমর্থন আদায়ের জন্য চুক্তিটি কাজে লাগিয়েছে। দ্বিতীয়তঃ দু’মাসেরও বেশি সময় যাবৎ পাকিস্তান ও ভারতের সশস্ত্র বাহিনীগুলোর প্রায় সমস্ত শক্তি সীমান্ত বরাবর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং যে কোন মুহুর্তে সার্বিক যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার মারাত্মক আশংকা রয়েছে। তৃতীয়তঃ যদিও চীন সর্বদাই পাকিস্তানের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে তবুও সাম্প্রতিক সময়ে সোভিয়েট ইউনিয়নের বিশেষভাবে ভারত ঘেঁষা বিবৃতিগুলোর সঙ্গে তুলনীয় কোন কিছু এ যাবৎ পাওয়া যায়নি।