পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)色○ বাংলায় ভ্রমণ -ജു চন্দ্রকোণায় রাজমাতা লক্ষ্মণাবতীর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত “রাজার মার পুকর” নামে একটি বৃহৎ জলাশয় আছে। “ রাজার মার কালীও ” বিশেষ প্রসিদ্ধ। চন্দ্রকোণায় বড়, মধ্যম ও ছোট অস্থল নামে তিনটি মঠে রামচন্দ্রের মুক্তি প্রতিষ্ঠিত আছে। পশ্চিম ভারতীয় তিন জন বৈষ্ণব মোহান্ত এই আখড়া তিনটির পরিচালক। এখানে নানকপন্থীদেরও একটি মঠ আছে। লর্ড সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন সিংহের পূর্ববপুরুষগণ চন্দ্রকোণার অধিবাসী ছিলেন। পরে তাহারা বীরভূম জেলার রাইপুর গ্রামে উঠিয়া যান। চন্দ্রকোণার কাসা ও পিতলের বাসন প্রসিদ্ধ। চন্দ্রকোণার চার পাঁচ মাইল দক্ষিণ পূবেৰ্ব আকৃরা গ্রামে “ ছোট দীঘি ” নামে একটি অতি বৃহৎ দীঘি আছে। একপার হইতে ইহার অপর পার দৃষ্ট হয় না। ইহা কাহার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত তাহা জানা যায় নাই। এখানে “ বড় দীঘি ” নামে অপর একটি বৃহত্তর দীঘি ছিল। উহা ভরাট হইয়া এখন ধান্যক্ষেত্রে পরিণত হইয়াছে। চন্দ্রকোণ রোড হইতে মোটরবাসযোগে মেদিনীপুর জেলার অন্যতম মহকুমা ঘাটালে যাওয়া যায়। ঘাটাল রূপনারায়ণ নদের উভয় তীরে অবস্থিত একটি প্রসিদ্ধ বন্দর। এখানকার দধি, বৃত ও মাটির হাড়ি খুব বিখ্যাত। ক্ষীরপাই—ক্ষীরপাই ঘাটাল মহকুমার একটি বড় গ্রাম। পূবেৰ্ব ইহা একটি মহকুমার স্যার ছিল। এক সময়ে এখানে ফরাসী, ওলন্দাজ, পর্তুগীজ ও ইংরেজ কেম্পানির কুঠি ছিল। নকটবৰ্ত্তী কাশীগঞ্জ গ্রামে ঈসটু ইণ্ডিয়া কোম্পানির একটি বৃহৎ কুঠি ছিল। উহার নিকটেই বেড়াবেড়া পল্লীতে যুরোপীয়গণের ছয়টি সমাধিস্তম্ভ আছে। সেকালে যুরোপীয় বণিক বা কর্মচারীদের সহিত এদেশের লোকেদের বিশেষ মেলামেশা ও সখ্য ছিল। সেই প্রাচীন বন্ধুত্বের কথা সূরণ করিয়া আজও এই পল্লীর অধিবাসীরা কোন শুভকাৰ্য্য বা পবর্ব উপলক্ষে এই বিদেশীয়গণের জীর্ণ সমাধির সম্মুখে দীপ দান করিয়া থাকেন। এই ব্যাপারটি ক্ষুদ্র হইলেও ইহা মানুষের সহিত মানুষের মিলনের পরিচায়ক হিসাবে বিশেষ প্রণিধানের যোগ্য। ১৭৭৩ খৃষ্টাব্দে “ সন্ন্যাসী হাঙ্গামার ” সময় একদল সন্ন্যাসী ক্ষীরপাই গ্রামে প্রবেশ করিয়া উৎপাত করিতে থাকে। মেদিনীপুরের রেসিডেণ্ট সাহেব তাঁহাদের মধ্যে অনেককে হত ও আহত করিয়া এই উৎপাত দমন করেন। দয়ার সাগর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের জন্মপল্লী বীরসিংহ গ্রাম ক্ষীরপাই গ্রামের নিকটবর্তী । . গড়বেতা—খড়গপুর জংশন হইতে ৩৭ মাইল দূর। ইহা একটি স্বাস্থ্যকর স্থান। গ্রামের মধ্যে রায়কোটা নামে একটি প্রাচীন দুর্গের ভগ্নাবশেষ দেখা যায়। এই দুর্গটির উত্তরে লাল দরজা, পূবেব রাউতা দরজা, দক্ষিণে পেশী দরজা ও পশ্চিমে হনুমান দরজা নামে চারিটি দরজা ছিল। আজিও স্থানীয় লোকে উহাদের ধবংসাবশেষ দেখাইয়া থাকে। এই দুর্গটি রগড়ীর চৌহানদিগের