পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৭8 बां६लांग्न बगd &e কৈবল্যধাম—লাকসাম জংশন ও চট্টগ্রাম হইতে যথাক্রমে ৭৪ ও ৪ মাইল। এখানে একটি ছোট পাহাড়ের উপর “কৈবল্যধাম ” নামে একটি আশ্রম ও কৈবৰ্যনাথ নামক মহাদেব আছেন। দুর্গাপূজার সময় এখানে বহু যাত্রীর সমাগম হয়। আশ্রম ও মন্দির ট্রেন হইতে দেখা যায়। চট্টগ্রাম ও পাহাড়তলী হইতে মোটর বা ঘোড়ার গাড়ীতেও যাওয়া চলে। পাহাড়তলী স্টেশন হইতে উত্তর-পূবর্ব দিকে মাত্র দেড় মাইল পথ। - পাহাড়তলী—লাকসাম জংশন হইতে ৭৮ মাইল দূরে চট্টগ্রাম শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত। এখানে আসাম-বাংলা রেলপথের গাড়ী তৈয়ারী ও মেরামতের কারখানা আছে। এখানকার পাহাড়ে ঘেরা লেক্‌ বা হ্রদ একটি বেড়াইবার জায়গা। এই হ্রদটি পানীয় জল সরবরাহের জন্য ব্যবহূত হয়। স্টেশনের নিকটে ভেলুয়ার দীঘির সহিত একটি পুরাতন কাহিনী জড়িত। দিল্লীতে দাসবংশীয় নৃপতিদের রাজত্বকালে পশ্চিমদেশ হইতে আমীর সওদাগর নামে একজন বণিক তাহার সুন্দরী স্ত্রী ভেলুয়াকে লইয়া বঙ্গদেশে আগমন করেন এবং কর্মসূত্রে চট্টগ্রামে তাহার সমব্যবসায়ী স্থানীয় ভোল৷ সওদাগরের সংস্পর্শে আসেন। ভোলা ভেলুয়ার রূপ দর্শনে মুগ্ধ হয় এবং এক দিন ভেলুয়া যখন নদীতে স্নান করিতেছিলেন সেই সময়ে তাহাকে হরণ করে। আমীর সওদাগর বাংলার নবাবের সাহায্যে অনেক দিন এবং অনেক চেষ্টা করিয়া বাহুযুদ্ধে ভোলাকে নিহত করিয়া পত্নীর উদ্ধার করেন। এই ঘটনার স্মৃতিকল্পে ও পত্নীর সম্মানের জন্য নিহত ভোলার বাস্তুভিটায় একটি প্রকাণ্ড দীঘি কাটাইয়াছিলেন । তখনকার গ্রাম্য কবির ভেলুয়া রহরণ বৃত্তান্ত লইয়া সুন্দর কাব্য রচনা করিয়াছিলেন। চট্টগ্রাম—লাকৃসাম জংশন হইতে ৮১ মাইল। বিভাগ ও জেলার প্রধান শহর চট্টগ্রাম কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত। কর্ণফুলী নদী পাবর্বত্য অঞ্চল হইতে নির্গত হইয়া ক্রমশ: বিস্তার লাভ করিতে করিতে পাবর্বত্য চট্টগ্রাম জেলার মধ্য দিয়া আসিয়া চট্টগ্রাম শহরের নিকটেই বঙ্গোপসাগরে মিলিত হইয়াছে। বৎসরের সকল সময়েই এই নদী দিয়া সমুদ্রগামী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে যাতায়াত করিতে পারে। বাংলাদেশে কলিকাতার পর চট্টগ্রামই একমাত্র সামুদ্রিক বন্দর। ইহা একটি আদর্শ ও স্বাভাবিক বন্দর এবং ইহার জল-বাণিজ্য বিশেষ সমৃদ্ধ। চট্টগ্রামের জোটসমূহ আসাম-বাংলা রেলপথ কর্তৃক বহুব্যয়ে নিৰ্ম্মিত হইয়াছে। চট্টগ্রাম একটি প্রাচীন স্থান। পুরাণ ও তন্ত্রশাস্ত্রে ইহা চট্টল নামে অভিহিত হইয়াছে। কেহ কেহ বলেন চট্টভট্ট জাতি চট্টলের প্রাচীন অধিবাসী, সেই জন্য ইহার নাম চট্টল বা চট্টগ্রাম হয়। কেহ বা বলেন সপ্তগ্রাম অঞ্চল হইতে বহুলোক এই স্থানে আসিয়া উপনিবেশ স্থাপন করেন বলিয়৷ তাহারা এই স্থানের নাম সপ্তগ্রাম রাখেন। পরে এই নাম বিকৃত হইয়া চপটগ্রাম ও তাহা হইতে চট্টগ্রাম হয়। স্থানীয় বাঙালী বৌদ্ধগণের অনেকে বলেন যে পূবেৰ্ব এই অঞ্চলে বহু চৈত্য বা বৌদ্ধ মঠ ছিল বলিয়া ইহার নাম চৈত্যগ্রাম হয়। চৈত্যগ্রাম পরে চট্টগ্রামে রূপান্তরিত হয় । আরাকানী ও মগের ইহাকে চাটিগ৷ বলিত। আরাকানী ইতিহাসে ইহাকে চাইতিগাও বা যুদ্ধলন্ধ গ্রাম এই আখ্যা দেওয়া হইয়াছে। সেইরূপ আরাকানের অপর নাম ছিল চাইতে স্নাও বা যুদ্ধলন্ধ নগরী। অনেকে অনুমান করেন, এই চাইতিগাঁও হইতেই চাটগ হইয়াছে। খৃষ্টীয় নবম-দশম শতাব্দীতে এ অঞ্চল বৌদ্ধজগতে প্রতিপত্তি লাভ করিয়াছিল এবং সুদূর তিববত হইতেও কতিপয় বৌদ্ধ পণ্ডিত শিক্ষালাভার্থ এখানে আসিয়াছিলেন বলিয়া জানা গিয়াছে। সে দেশেও ইহার নাম