পাতা:বাংলায় ভ্রমণ -দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসাম বাংলা রেলপথে ১৭৯ এই জেলার প্রধান শহরের নাম রঙ্গমতী বা রাঙামাটি। শহরটি কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত এবং জলপথে চট্টগ্রাম হইতে ৬৫ মাইল দুর। স্টীমলঞ্চে একদিনে এবং নৌকাযোগে দুইদিনে যাওয়া যায়। পথটি বড়ই রমণীয়। ভ্রমণকারীদিগের অবস্থানের জন্য রাঙামাটিতে একটি সুসজ্জিত সার্কিট হাউস আছে। - বাঙনাটশহরে চাকমা জাতীয় জনৈক বাজার প্রাসাদ অবস্থিত। নূতনপাড়া—চট্টগ্রাম জংশন হইতে আসাম বাংলা রেলপথের এক শাখা লাইন ২৩ মাইল দূরবর্তী নাজারহাট ঘাট পৰ্য্যন্ত গিয়াছে। এই লাইনে নূতনপাড়া স্টেশন চট্টগ্রামের শহরতলিতে অবস্থিত। এই স্টেশনের অৰ্দ্ধ-মাইল পশ্চিমে পীর মুলতান বায়েজিদ বোস্তানী সাহেবের দরগাহ অবস্থিত; ইহার কথা আগে বলা হইয়াছে। নাজিরহাট ঘাট-চট্টগ্রাম নাজিরহাট ঘাট শাখা লাইনের শেষ স্টেশন। ইহার নিকটেই মাইজভাণ্ডার গ্রামে প্রসিদ্ধ পীর হজরত মৌলানা সৈয়দ গোলাম রহমান শাহ সাহেব জন্মগ্রহণ করেন। তাহার আধ্যান্ত্রিক ক্ষমতার কথা সুদূর আফগানিস্থান, ইরান্ত ও আরব পর্য্যন্ত পৌছিয়াছিল এবং বহুলোক তাহার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। মাত্র কয়েক বৎসর হইল তিনি পরলোকে গিয়াছেন। তাহার পবিত্র সমাধি দেখিতে প্রত্যহ অসংখ্য লোক আসিয়া থাকেন। - | ধলঘাট—চট্টগ্রাম জংশন হইতে অপর একটি শাখা লাইন ২৯ মাইল দূরবর্তী দোহাজারী পৰ্য্যন্ত গিয়াছে। এই লাইনের মাঝপথে ধলঘাট স্টেশন। ধলঘাট হইতে প্রায় ৫ মাইল দূরে করলডেঙ্গা পাহাড়ে মেধযু আশ্রম অবস্থিত। কিংবদন্তী, প্রসিদ্ধ ধৰ্ম্মগ্রন্থ চণ্ডীর বক্তা মেধস্থ মুনি এই এই স্থানে দেহত্যাগ করেন। প্রতি বৎসর দুর্গ পূজার সময় মেধস্থ মুনির স্মরণার্থে একটি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। ইহাতে বহুলোক যোগদান করেন। মহর্ষি মার্কণ্ডেয়ও এই স্থানে বাস করিতেন বলিয়া কথিত । দোহাজার-চট্টগ্রাম-দোহাজারি শাখা লাইনের শেষ স্টেশন। এখান হইতে দুৰ্গম পৰ্ব্বত ও গভীর অরণ্য ভেদ করিয়া আকিয়াবের মধ্য দিয়া ব্ৰহ্মদেশ পর্য্যস্ত রেলপথ বিস্তারের একটি পরিকল্পনা আছে। দোহাজারি স্টেশনের নিকটে অবস্থিত মির্জারখীল গ্রামে হজরত জাহাঙ্গীর শাহ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি গভীর জ্ঞান ও ধৰ্ম্মপরায়ণতার জন্য দেশ বিদেশের মুসলমান সমাজের বিশেষ শ্রদ্ধার পাত্র হইয়াছিলেন। প্রতিবৎসর ১৭ই জেলহজজ তারিখে তাহার মৃত্যু উপলক্ষে মিজর্জরিখীল গ্রামে সপ্তাহব্যাপী উৎসব হয় এবং জাতি-ধৰ্ম্মনিবিবশেষে বহুলোক ইহাতে যোগদান করেন ।