পাতা:বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

X 8 বাংলা লিরিকের গোড়ার কথা বৌদ্ধধর্ম, ওদিকে তেমন বাঙালী সংস্করণের ব্রাহ্মণ্যধর্ম পাশাপাশি চলেছিল। আর তাদেরই সঙ্গে একাধারে প্রচার ছিল দেশজ হিন্দুধর্ম। কিন্তু সেনবংশীয়ের অন্যত্র থেকে এসে শেষে বাংলাদেশের রাজা বনে গেলেন। তারা বৌদ্ধধর্মও বুঝতেন না, এ-দেশের লৌকিক ধর্মেও তাদের আস্থা ছিল না। র্তারা রপ্ত ছিলেন ব্রাহ্মণ্যধর্মে। ঝোকও তাদের ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির উপর । 疊 সেনরাজাদের দরবারে তাই ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতের আদর বেশি হল । চারদিক থেকে বাংলাদেশে ব্রাহ্মণ্য আচারের প্রতিষ্ঠা করার প্রাণপণ চেষ্টা চলতে লাগল। নতুন করে বাংলাদেশে ব্রাহ্মণ্য স্মৃতিশাস্ত্র রচনা হল। সঙ্গে সঙ্গে ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতির বাহন ষে সংস্কৃত ভাষা, তারও প্রচার বাড়ল । দেশের প্রাকৃত ভাষা অনেক পিছনে পড়ে রইল। তখনকার জ্ঞানীগুণী ভদ্রলোকেরা লিখতেন পড়তেন সংস্কৃতে । পণ্ডিতে পণ্ডিতে কথাবার্তা তর্কবিবাদ চলত বোধ হয় ঐ সংস্কৃত ভাষায়। বাংলা হয়ে গেল অসাধু গ্রাম্য ভাষা, সাধারণ ইতর লোকদের ব্যবহারের নিমিত্ত । লেখাপড়া জানা পণ্ডিত ব্যক্তিরা সে-ভাষাকে অবজ্ঞার চোখেই দেখতে লাগলেন । এসব সত্ত্বেও কিন্তু সিদ্ধাচার্যদের সহজধর্মকে এ-দেশ থেকে তাড়ানো সহজ হয় নি। সেটা শুধু ভদ্রজনের হাত ফিরে নিম্নশ্রেণীর লোকদের ঘাড়ে চেপে বসে গেল । তার পর বাংলাদেশে নবাগত ব্রাহ্মণ্যধর্মকে এই অশাস্ত্রীয় সহজধৰ্ম বারবার ঘা দিতে দিতে তার চেহারাট ক্রমশই বদলিয়ে দিতে লাগল। দেখা গেল, বিশুদ্ধ ব্রাহ্মণ্যধর্ম আস্তে আস্তে প্রচলিত ভক্তিধর্মে কিংবা শাক্তধর্মে রূপান্তরিত হচ্ছে । সিদ্ধাচার্যদের সহজধর্ম এ-দেশের নিম্নশ্রেণীর মধ্যে কতদূর প্রবেশ করেছিল তার পরিচয় পাওয়া যায় ঐ নিয়শ্রেণীরই সাধুলস্তদের মুখে রূপক অলংকারে রচিত গানে J আউল বাউল সাই দরবেশ ইত্যাদির গানে