পাতা:বাগেশ্বরী শিল্প-প্রবন্ধাবলী.djvu/২০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
১৯৪
বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী

নদীর ইতিহাস জানতে হয় তার আদি অন্ত এবং মধ্য লীলা নিয়ে ; মানব শিল্পের ইতিহাসও ঠিক এই হিসেবে ধরে চর্চা না করলে শিল্পীকে 'সম্পূর্ণভাবে জানা হ’ল না। এই যে তাজমহলটা স্বষ্টি হল আমাদের দেশে, এটার উৎপত্তির কারণ তুরস্ক কি মোগল সভ্যতার উপরে সম্পূর্ণ ভাবে ছাড়া তো যায় না ; যে দেশ থেকে মোগল জাতি তাদের সভ্যতা নিয়ে এল ভারতে, সে দেশেও যাকে আমরা বলি মোগল স্থাপত্য ত৷ ঠিক ঠাক আগ্রা কি দিল্লীর মতো নয়। তাঞ্জের কিম্বা সেকেন্দ্রার কি আগ্রার বা দিল্লীর স্থাপত্য যে প্রবৃত্তির প্রেরণায় মানুষ সৃষ্টি করলে, ঠিক সে প্রবৃত্তি নিয়ে বোগদাদ বসোর কাবুল পারস্য দেশের भाशय তাদের সমাধি ব! রাজভবনগুলো গড়েনি। একই মোগল শিল্প, কিন্তু তার প্রকাশ হ’ল দেশ কাল ইত্যাদি ভেদে নতুন রকমে । চীন দেশে গিয়ে মোগল শিল্প এক ছাচ পেলে, ভারতে আর এক, ভারতের পশ্চিমে অন্য ছাচ পেলে, আবার পূবে পশ্চিমে গিয়ে আপনার ছাঁচ বদলালে। মানুষের প্রবৃত্তির অদল বদল যা ঘটছে মানুষের মনে তা এ জাতের সঙ্গে ও জাতের, এ ধমের সঙ্গে ও ধমের, এ সভ্যতার সঙ্গে ও সভ্যতার ধাক্কায় ; তাতে করেই শিল্পের ধারা নতুন নতুন ঢেউ তুলে অগ্রসর হচ্ছে বিচিত্র পথে যৌবন অবস্থায়। মানুষের বয়সের যেমন পুনরাবৃত্তি নেই তেমনি শিল্পেরও পুনরাবৃত্তি সম্ভব নয়। শিল্পের সপ্তম আশ্চর্য সে আর একটিবারও ঠিক অমনিটি হ’য়ে দেখা দিতে পারে না, হয়তো অষ্টম আশ্চর্যা প্রকাশ হবে শিল্প জগতে, কিন্তু সপ্তম সে বরাবর সপ্তমেই থাকবে । কলের শিল্প একটার মতো একলক্ষ স্বজন করে চলে কিন্তু যার সঙ্গে মানুষের মনোবৃত্তির যোগাযোগ তার নিয়মে এক জিনিষ দুবার সৃষ্টি হয়ে চলে না। ছেলে যখন কাপিবুক্‌ কপি করছে—তখন খাতার প্রত্যেক পাতায় লিখে চল্লে। “সেবকগ্ৰী” কিন্তু সেই ছেলে বড় হ’য়ে যখন রচনা সুরু করলে তখন নতুন নতুন ছত্র দিয়ে সে খাতা ভতি করে গেল, নতুন নতুন ভাবের টানে লেখা নব নব ছন্দ পেয়ে চল্লো খাত ভরে দিয়ে । কিছু বলতে বা প্রকাশ করতে পারুক বা নাই পারুক কলম চালানোতেই শিশু আনন্দ পায়। শিল্পের শৈশব অবস্থার কথাও এই, সেখানে শুধু হাতের কাজেই শিল্পীর আনন্দ। র্তাতি যখন কাপড়ের কিনারায়