পরিচয়ের দ্বারা ঔদাসীন্য এনে দেয় না তাঁদের মনে, পলে পলে বারে বারে এরা মনের সঙ্গে এসে লাগে, চোখে এসে লাগে এরা নতুন হ’য়ে মধুর হ’য়ে।
পর্বত একবার দুবার দেখলে তাকে দেখার তৃষ্ণ মিটে গেল আমাদের, কিন্তু রূপদক্ষ তাঁরা আমাদের চেয়ে সৌভাগ্যবান, তাঁরা তো শুধু রূপ বা ভাবটাই পেলেন না পর্বতের বা অরণ্যের বা ফুলের বা কবিতার বা ছবির অথবা গানের—তাঁরা রূপের সঙ্গে রূপের ভাব এবং তাদের মাধুরী যা রূপকে চিরযৌবন দেয় তা পর্যন্ত পেয়ে ধন্য হলেন।
যাঁরা সত্যি রূপদক্ষ তাঁদের আনন্দের শেষ নেই, চোখ, মন সব দিয়ে একটি রূপকে তাঁরা বিচিত্রভাবে দেখে’ যাচ্ছেন নতুন নতুন—চিরকাল ধরে’ নতুন। হিমালয় পর্বত সেও রূপের রঙের সঞ্চয় নিয়ে পুরোনো হ’য়ে শেষ হ’য়ে গেল যাদের কাছে এমন মানুষ খুব কম নেই, কিন্তু হিমালয়ের একটা পাথর একটা গাছ মাধুরী পেয়ে অফুরন্ত হয়ে রইলো, চিরনূতন হ’য়ে গেল যার কাছে এমন মানুষই কম দেখা যায়।
গানে যে রূপ ফুটছে, কবিতায় যে রূপ, ছবিতে যে রূপ এবং বিশ্বের এই বিশ্বরূপ—সবারই কায মাধুরীতে মনকে তলিয়ে দেওয়া। এই মাধুরী স্পর্শ করে’ চলেছে তাবৎ জীব, কেউ এতে তলিয়ে যাচ্ছে, কেউ সমুদ্রের জলে তেলের মতো উপরে উপরে ভাসতে থাকছে তলাতে পারছে না।
চন্দ্রোদয় দেখে ‘আহা সুন্দর’ বলে না এমন লোক কম, কিন্তু তারা সবাই চাঁদের মাধুরীকে পেয়ে যায় না। এই ধরণের সাধারণ ভাবপ্রবণতা চন্দ্রকান্ত-মণির মতো চাঁদ উঠতেই ভিজে ওঠে, কিন্তু কিছু উৎপন্ন করে না মনের সামগ্রী। অসাধারণ ভাবপ্রবণতা হ’ল মাটির মতো, রসে ভেজে, বীজে ফল ধরায়, শক্তি গজায়, ফুল ফোটায়, ফল দেয় নানা রকম।
জিনিষটাকে বার থেকে বেশ করে’ চেনা হ’ল এবং তার ভিতরের ভাবটাও যাহ’ক নিপুণভাবে বার করে’ দেখা হ’ল কিন্তু বাকি রইলো তখনো আসল যেটা পাবার সেটি পাওয়া—রূপের মাধুরীটুকু।
আর্টের সঙ্গে আর্টিষ্টকে পাই তাই আর্টের আদর করি, রূপের আড়ালে অরূপকে দেখি তাই রূপের আদর করি, এমনি কতকগুলো বচন আর্ট-সমালোচনাতে প্রচলিত হ’য়ে গেছে। আর্টিষ্টের এবং অরূপের