পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৯৮
বাঙ্গালার ইতিহাস।

খৃষ্টাব্দে নেপালে আবিষ্কৃত হইয়াছিল। ১৯০০ খৃষ্টাব্দে শাস্ত্রী মহাশয় এসিয়াটীক সোসাইটীর কার্য্য-বিবরণীতে ‘রামচরিতে’র সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রকাশ করিয়াছিলেন[১]। শাস্ত্রী মহাশয় নেপাল হইতে সম্পূর্ণ মূলগ্রন্থ এবং প্রায় অর্দ্ধগ্রন্থের টীকা এসিয়াটীক সোসাইটীর জন্য আনয়ন করিয়াছেন। এই গ্রন্থ এখন কলিকাতার এসিয়াটীক সোসাইটীর পুস্তকাগারে রক্ষিত আছে। ইহার দ্বিতীয় অধ্যায়ের পঞ্চত্রিংশৎ শ্লোক পর্য্যন্ত টীকা আছে। ইহা ‘রাঘব পাণ্ডবীয়ের’ ন্যায় দ্বর্থ্যবাচক কাব্য। প্রত্যেক শ্লোকের দুইটি টীকা আছে, একটি রামপক্ষে ও অপরটি রামপাল পক্ষে। যে অংশের টীকা পাওয়া যায় নাই, সেই অংশ হইতে ঐতিহাসিক তথ্য সংগ্রহ করা অতীব দুরূহ। ‘রামচরিত’ মূল ও টীকা তালপত্রে খৃষ্টীয় দ্বাদশ অথবা ত্রয়োদশ শতাব্দীর অক্ষরে লিখিত। মূল গ্রন্থ অপেক্ষা টীকার অক্ষর প্রাচীন বলিয়া বোধ হয়। ‘রামচরিতে’র টীকা ঐতিহাসিকের নিকটে ‘রামচরিত’ অপেক্ষা মূল্যবান গ্রন্থ। টীকা আবিষ্কৃত না হইলে ঐতিহাসিকগণ ‘রামচরিতে’র এত আদর করিতেন কি না সন্দেহ। এই টীকাতেই রামপালের রাজত্বকালের প্রধান প্রধান ঘটনার বিবরণ লিপিবদ্ধ হইয়াছে। ‘রামচরিতে’র প্রথম তিন অধ্যায়ে রামপালের রাজকালের ঘটনা এবং চতুর্থ অধ্যায়ে কুমারপাল, তৃতীয় গোপাল এবং মদনপালদেবের রাজ্যকালের ঘটনাসমূহ বিবৃত হইয়াছে। রামায়ণের উত্তরাকাণ্ডের ন্যায় ‘রামচরিতে’র চতুর্থ অধ্যায় “রামোত্তরচরিত” নামে পরিচিত। খৃষ্টীয় একাদশ শতাব্দীর শেষার্দ্ধে রামপালকে রামের সহিত তুলনা করা কবিগণের মধ্যে সংক্রামক হইয়া উঠিয়াছিল। বৈদ্যদেবের প্রশস্তি রচয়িতা মনোরথও এই উপমা ব্যবহার করিয়াছেন। “সেই প্রবলপরাক্রমশালী নরপালের রামপাল নামক এক পুত্র জন্ম গ্রহণ

  1. Proceedings of the Asiatic Society of Bengal, 1900, p. 70.