রাজ্যাঙ্কের শিলালিপি অপেক্ষা ভট্টভবদেবের প্রশস্তি প্রাচীন এবং কমৌলিতে আবিষ্কৃত বৈদ্যদেবের তাম্রশাসন অপেক্ষ হরিবর্ম্মদেবের তাম্রশাসনের অক্ষর প্রাচীন। শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস, ব্রাহ্মণকাণ্ডের দ্বিতীয়ভাগে হরিবর্ম্মদেবের তাম্রশাসনের একটি প্রতিলিপি ও উদ্ধৃত পাঠ প্রকাশ করিয়াছেন। শ্রীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ, বসুজ মহাশয়ের পাঠোদ্ধার সম্বন্ধে যে মত প্রকাশ করিয়াছেন, তাহা সম্পূর্ণ সত্য; উদ্ধৃত পাঠ আনুমানিক[১]। ১৯০৬ খৃষ্টাব্দে স্বর্গীয় অধ্যাপক হরিনাথ দে এই তাম্রশাসন খানি আমাকে কয়েক দিনের জন্য প্রদান করিয়াছিলেন। সেই সময়ে আমি বসুজ মহাশয়ের উদ্ধৃত পাঠ পরীক্ষা করিবার সুযোগ পাইয়াছিলাম। মহামহোপাধ্যায় শ্রীযুক্ত হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর যত্নে নেপালে হরিবর্ম্মদেবের রাজত্বকালে লিখিত দুইখানি হস্তলিখিত গ্রন্থ আবিষ্কৃত হইয়াছে। প্রথমখানি অষ্টসাহস্রিকা প্রজ্ঞাপারমিতা, ইহা হরিবর্ম্মদেবের ঊনবিংশ রাজ্যাঙ্কে লিখিত হইয়াছিল। দ্বিতীয়খানি কালচক্রযানটীকা, ইহার নাম বিমলপ্রভা, ইহা হরিবর্ম্মদেবের ৩৯শ রাজ্যাঙ্কে লিখিত হইয়াছিল। নূতন আবিষ্কার না হইলে হরিবর্ম্মদেবের রাজত্বকাল নির্ণীত হইতে পারে না। তবে ইহা স্থির যে, হরিবর্ম্মদেব শ্যামলবর্ম্মা অথবা ভোজবর্ম্মার পরবর্ত্তী কালে আবির্ভূত হন নাই এবং বজ্রবর্ম্মা বা জাতবর্ম্মার পূর্ব্ববর্ত্তী নহেন। শ্রীযুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়, শ্রীযুক্ত রাধাগোবিন্দ বসাক ও শ্রীযুক্ত নলিনীকান্ত ভট্টশালীর[২] মতে হরিবর্ম্মা ভোজবর্ম্মার পরবর্ত্তী এবং শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসুর মতে তিনি বজ্রবর্ম্মারও পূর্ব্ববর্ত্তী[৩]।
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩২৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০৪
বাঙ্গালার ইতিহাস।