পাতা:বাহ্যবস্তুর সহিত মানব প্রকৃতির সম্বন্ধ বিচার (প্রথম খণ্ড).pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[।৵৹ ]

জ্ঞান করে বলিয়া বাস্তবিক সদাচার বলা যায় না। এক ধর্ম্মাক্রান্ত লোকের মধ্যেও আচার ব্যবহারের বিস্তর বিভিন্নতা দেখা যায়। হিন্দুস্থানীরা পাক-করা তণ্ডুলাদিকে অশুদ্ধ ও অশূণ্য জ্ঞান করে না, এবং তাহ গাত্রে ও বস্ত্রে স্পৃষ্ট হইলে গাত্র ও বস্ত্র ধৌতও করে না। উড়িস্যা অঞ্চলে এক প্রকার বিধবা-বিবাহ প্রচলিত আছে। মহারাষ্ট্রীয় লোকে স্ত্রী পুরুষে পঙ্‌ক্তি ভোজনে বসিয়া একত্র আহার করে। কিন্তু বাঙ্গলা দেশীয় লোকের আচার ব্যবহার ইহার সম্পূর্ণ বিপরীত। বাঙ্গলাদেশীয় লোক ও হিন্দুস্থানী প্রভৃতি অন্যান্য দেশীয় লোক উভয়েরই পরস্পরবিরুদ্ধ ব্যবহার কোন ক্রমেই হিন্দু শাস্ত্রসন্মত হইতে পারে না। অতএব, দেশাচার মাত্রই যে বিহিত, এ কথা নিতান্ত যুক্তিবিরুদ্ধ। যে রীতি-বর্ত্ম পরমেশ্বরের নিয়মানুযায়ী তাহাই যথার্থ বিহিত। বিশ্বনিয়ন্তা বিশ্ব-রাজ্য পালনার্থে নানা প্রকার শুভদায়ক নিয়ম সংস্থাপন করিয়াছেন, এবং তন্নিরূপণার্থে আমাদিগকে বুদ্ধি বৃত্তি প্রদান করিয়াছেন। পরম্পরাগত দোষাকর দেশাচারের অনুরোধে পরমেশ্বর প্রদত্ত বুদ্ধিরতি পরিচালনে ও তৎপ্রতিপন্ন তত্ত্ব সমুদায়ের অনুষ্ঠানে অবহেলা করিলে অপরাধী হইতে হয়। অতএব, ব্যগ্রতা প্রকাশ পূর্ব্বক নিবেদন করিতেছি, যদি কেহ এই গ্রন্থ মধ্যে কোন স্বমতবিরুদ্ধ অভিপ্রায় দৃষ্টি করেন, তবে তাহাতে একেবারে অশ্রদ্ধা না করিয়া বিচার করিয়া দেখিবেন। মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিতদিগেরও কোন