পাতা:বিদ্যাপতি ঠাকুরের পদাবলী - নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাপতি । মাধবকে হস্ত ধারণ করিতে কহিলেন তখনি তিনি আত্মসমর্পণ করিলেন, কারণ পরপুরুষের পক্ষে পরস্ত্রীর হস্ত ধারণ নিষিদ্ধ। আবার যখন রাধা নিজের কণ্ঠহার মাধবকে দিতে অঙ্গীকার করিলেন তখন র্তাহাকে মনে মনে পতিত্বে বরণ করিলেন। সর্থীরা অন্ত পথে চলিয়া গিয়াছে, তাহাদের সহিত সাক্ষাৎ হইবার সম্ভাবনা নাই, সে সঙ্কেতও হইল। তাহার পর রাধা সঙ্কেতে কহিলেন, এখানে লোকের যাতায়াত আছে, এখানে আমাকে ডাকি ৭ না, কিম্বা আমার নিকটে আসিও না, যে পথে লোক চলে মা আমি সেই আঘাটার পথে যাইতেছি, তুমি সেই স্থানে আসি ও । কবি কহিতেছেন, সনদরি মনে দ্বিধ করিও না, মধুকরীর স্তায় গুঞ্জরিয়া আনন্দে ভগবানের ( মাধবকে ) ভজনা কর । মাধব তোমাকে পাইবেন, তোমার ও ভগবৎপ্রাপ্তি ঘটিবে । সকল পদেরই এইরূপ প্রতাক্ষ ও গৃঢ় দৃষ্ট প্রকার অর্থ হয়, কিন্তু দ্বিতীয় প্রকার অর্থ এই সঙ্কলনের উদ্দেশ্রাবহির্ভূত। কেবল ষ্টান্তস্বরূপ এই একটি পদের অর্থ দ্বৈত প্রদর্শিস্থ শইল । Ꮌ Ꮌ ☾ ( রাধার উক্তি ) তুআ গুন গৌরব সীল সোভাব । সেহে লএ চালিন্ত তোহরী নাব ৷ ২ ৷ হঠ ন করিঅ কহ, কর মোহি পার । সব তহ বড় থিক পর উপকার ॥ ৪ । আইলি সখি সবে সাথে হুমার । সে সবে ভেলি নিকহি বিধি পার ॥ ৬ । হমরা ভেলি কাহ্ন, তোহরেও আস। জে আঁগিরিআ তা ন হোইআ উদাস ॥ ৮ । ভল মন্দ জানি করিআ পরিনাম । জস অপজস দুই রহ গএ ঠাম ॥ ১০ । ዓ> হমে অবলা কত কহব অনেক । আইতি পড়লে বুঝিঅ বিবেক ॥ ১২। তোহেঁ পর নাগর হমে পর নারি। কঁপি হৃদয় তুআ প্রকৃতি বিচারি ॥ ১৪। ভনই বিদ্যাপতি গাবে। রাজা সিবসিংহ রূপনরাএন ই রস সকল সে পাবে ॥ ১৬ । তালপত্রের পুণি ও রাগতরঙ্গিণী । ২ । সেহে লএ—সেই লাগিয়া, সেই কারণে। নাব—নৌকা । ১-১ । তোমার গুণ গৌরব (ও) স্বভাবের শীলতা ( আছে ) সেই কারণে তোমার নৌকায় চড়িলাম। ৩ । কহ্ন—কানাই। ৪ । থিক—হয়। ৩-৪ । কানাই, হঠ (জিদ ) করিও না, আমাকে পার কর, পরোপকার সকলের অপেক্ষ বড়। ৬ । নিকহি—উত্তম । ৫-৬। আমার সঙ্গে সর্থী সকল আসিল, তাহারা উত্তম রূপে পার হইল । ৮ । অগিরিয়—অঙ্গীকার । তা—তাহাতে । ৭-৮। কানাই, আমার তোমারি আশা, যাহা অঙ্গীকার করিয়াছ তাহা ( পালনে ) উদাসীন হইও ন! | ৯-১০ । পরিণাম ভাল কি মন্দ জানিয়া ( কাৰ্য্য ) করিও, যশ ও অপযশ দুষ্ট (এই) স্থানে ( এই জগতে ) রহিয়া যায় । ১২ । আইতি—আয়ত্ত । ১১-১২ । আমি অবলা, অধিক (আর) কত কহিব, (তোমার ) আয়ত্তে পড়িয়াছি, বিবেচনা করিয়া বুঝিও । ১৩-১৪ । তুমি পরপুরুষ আমি পরস্ত্রী, তোমার প্রকৃতি বিচার করিয়া ( আমার ) হৃদয় কঁাপিতেছে। ১৫-১৬ । বিদ্যাপতি গাহিয়া কহিতেছে, রাজা শিবসিংহ রূপনারায়ণ এই রস সমস্তই প্রাপ্ত হন।