পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বোধোদয়—ইন্দ্রিয় N BÒ বাচিতে পারে, কিন্তু চিরজীবী হইবেক না । কেহই অমর নহে, সকলকেই মরিতে হইবেক । سععة জন্তু সকল মরিলে, তাহাদের শরীরে প্রাণ ও চেতন থাকে না । তখন উহার আর, পূর্বের মত, দেখিতে, শুনিতে, চলিতে, বলিতে কিছুই পারে না ; কেবল অচেতন স্পন্দহীন জড় পদার্থ মাত্র পড়িয়া থাকে । মৃত শরীর বিশ্রী ও বিবর্ণ হইয়া যায়, দেখিলে অত্যন্ত দুঃখ জন্মে ; এজন্য, লোকে অবিলম্বে তাহ। দগ্ধ করে। কোনও কোনও জাতি দাহ করে না, মাটিতে পুতিয়া ফেলে । মনুষ্য শৈশব কালে অতি অজ্ঞ থাকে ; ক্রমে ক্রমে যত বড় হয়, উপদেশ পাইয়া, নানা বিষয় শিখিতে আরম্ভ করে । আমরা এই যে পৃথিবীতে বাস করিতেছি, ইহা কত বড়, ইহার আকার কেমন, শিশুরা তাহাব কিছুই জানে না । অধিক কি, তাহাদের কি নাম, কোন হাত ডান, কোন হাত বা, শিখাইয়া ন দিলে, ইহাও জানিতে পারে না । বালকের সকল বিষয়ে অজ্ঞ বলিয়া, তাহাদিগকে শিক্ষার্থে পাঠশালায় পাঠান যায়। যাহারা বাল্যকালে যত্ন পূৰ্ব্বক বিদ্যাভ্যাস করে, তাহারা মনের সুখে কালযাপন করে । আর, যাহার, বিদ্যাভ্যাসে আলস্য ও অবহেলা করিয়া, কেবল খেলিয়া বেড়ায়, তাহারা মূখ হয় ও যাবজ্জীবন দুঃখ পায় । ইন্দ্রিয় ইন্দ্রিয় জ্ঞানের দ্বারস্বরূপ, অর্থাৎ ইন্দ্রিয় দ্বারা সর্বববিধ জ্ঞান জন্মে। ইন্দ্রিয় না থাকিলে, আমরা কোনও বিষয়ে কিছু মাত্র জানিতে পারিতাম না । মনুষ্যের পাচ ইন্দ্রিয়। সেই পাচ ইন্দ্রিয় এই ; চক্ষু, কর্ণ, নাসিক, জিহবা, ত্বক । চক্ষু দ্বারা যে জ্ঞান জন্মে, তাহাকে দর্শন বলে ; কৰ্ণ দ্বারা যে জ্ঞান জন্মে, তাহাকে শ্রবণ ; নাসিক। দ্বারা যে জ্ঞান জন্মে, তাহাকে অস্ত্ৰাণ ; জিহব। দ্বারা যে জ্ঞান জন্মে, তাহাকে আস্বাদন ; ত্ত্বক দ্বারা যে জ্ঞান জন্মে, তাহাকে স্পর্শ বলে । চক্ষু চক্ষু দর্শনেন্দ্রিয় । চক্ষু দ্বারা সকল বস্তুর দর্শন নিম্পন্ন হয় । চক্ষু না থাকিলে, কোন বস্তুর কেমন আকার, কোন বস্তু সাদা, কোন বস্তু কাল, কিছুই জানিতে পারিতাম