পাতা:বিদ্যাসাগর গ্রন্থাবলী (শিক্ষা ও বিবিধ).djvu/৬৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংস্কৃতভাষা ও সংস্কৃতসাহিত্যশাস্ত্রবিষয়ক প্রস্তাব ᏬᎩ Ꮌ ভটিকাব্য ভট্টিকাব্যে রামের চরিত্র বর্ণিত হইয়াছে। এই মহাকাব্য দ্বাবিংশতি সর্গে বিভক্ত। গ্রন্থকৰ্ত্ত স্বরচিত কাব্যের শেষে আপনার একপ্রকার পরিচয় দিয়াছেন, কিন্তু নাম নির্দেশ করেন নাই। প্রামাণিক প্রাচীন টীকাকার জয়মঙ্গল কহেন, এই মহাকাব্য ভট্টনামক কবির রচিত ; ভটিকাব্য নাম দ্বারাও ইহাই সম্যক প্রতিপন্ন হইতেছে। কিন্তু অধুনাতন টকাকার ভরতমল্লিক, আপন মতের প্রতিপোষক প্রমাণ প্রদর্শন ব্যতিরেকেই, ভটিকাব্যকে ভর্তৃহরিপ্রণীত বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন। ভর্তৃহরি ও এই কাব্যের রচয়িত উভয়েই অতি প্রধান বৈয়াকরণ ছিলেন, বোধ হয় এই সাদৃশ্য দর্শনেই ভরতমল্লিকের ভ্রান্তি জন্মিয়াছিল। গ্রন্থকৰ্ত্ত কাব্যের শেষ শ্লোকে (৭) লিখিয়াছেন, আমি বলভাপতি নরেন্দ্র রাজার রাজধানীতে থাকিয়৷ এই কাব্য রচনা করিলাম। যদি ভরতমল্লিক এই শ্লোক দেখিতেন, তাহ হইলে তিনি ঐ ভ্ৰমে পতিত হইতেন না। যেরূপ জনশ্রুতি আছে, তদনুসারে ভর্তুহরি স্বয়ং রাজা ছিলেন । যে ব্যক্তি স্বয়ং রাজা হন তিনি, অমুক রাজার রাজধানীতে থাকিয়া এই গ্রন্থ রচনা করিলাম, আপন গ্রন্থে কদাচ এরূপ নির্দেশ করেন না । ভরতমল্লিক শেষ চারি শ্লোকের টীকা করেন নাই ; তাহাতেই বোধ হইতেছে, এই চারি শ্লোক তাহার দৃষ্টিপথে পতিত হয় নাই । ভটিকাব্যের রচনা স্থানে স্থানে অতি সুন্দর। বিশেষতঃ, দ্বিতীয় সর্গের প্রারম্ভে যে হৃদয়গ্রাহিণী শরদ্বর্ণনা আছে, তদ্বারা গ্রন্থকৰ্ত্তার অসাধারণ কবিত্বশক্তির বিলক্ষণ প্রমাণ পাওয়া যাইতেছে। কিন্তু ব্যাকরণের উদাহরণপ্রদর্শন গ্রন্থকৰ্ত্তার যেরূপ উদ্দেশ্য ছিল, কবিত্বশক্তি প্রদর্শন করা তাদৃশ উদেশ্ব ছিল না। এই নিমিত্তই, ভটিকাব্যের অধিকাংশ অত্যন্ত নীরস ও অত্যন্ত কর্কশ । যদি তিনি, ব্যাকরণের উদাহরণপ্রদর্শনে ব্যগ্র না হইয়া, কাব্যরচনায় মনোনিবেশ করিতেন, তাহা হইলে ভট্টিকাব্য উৎকৃষ্ট মহাকাব্য মধ্যে পরিগণিত হইতে পারিত, সন্দেহ নাই । এই যে ছয় মহাকাব্যের বিষয় উল্লিখিত হইল, ইহারাই অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ও অত্যন্ত প্রচলিত। ভারতবর্ষের সৰ্ব্ব প্রদেশেই এই ছয়ের সচরাচর অনুশীলন আছে । (৭) কাব্যমিদং বিহিতং ময়া বলভ্যাং ঐধরসেননরেন্দ্রপালিতায়াম্। কীৰ্ত্তিরতো ভবতায় পস্ত তস্য ক্ষেমকর: ক্ষিতিপো যতঃ প্রজানাম্।