পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/১৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
১৫৭

৮৲ টাকা দিতেন; আর বীরসিংহ বিদ্যালয়ের বাঙ্গাল ডিপার্টমেণ্টের তত্ত্বাবধানে নিযুক্ত রাখিয়াছিলেন, তজ্জন্যও উপযুক্ত বেতন দিতেন। ইহাঁর অন্য আর এক স্ত্রীর গর্ভসম্ভৃত এক পুত্রকেও মাসিক ১০৲ টাকা বেতনে বিদ্যালয়ের তৃতীয় পণ্ডিতের পদে নিযুক্ত করিয়াছিলেন। উক্ত মহাশয়েরা দাদার বিলক্ষণ খাতির রাখিতেন। গুরুমহাশয়ের ভগিনীদ্বয় ও ভাগিনেয় তাঁহারই বাটীতে থাকিতেন। তিনি যাহা উপাৰ্জ্জন করিতেন ও ভূম্যাদির উপস্বত্ব যাহা প্রাপ্ত হইতেন, তৎসমস্তই ভগিনীদ্বয়ের হস্তে সমর্পণ করিতেন। চট্টোপাধ্যায় মহাশয় নিজে অতি ভদ্রলোক ছিলেন। দেশস্থ সকলেরই সহিত তিনি সৌজন্য প্রকাশ করিতেন। এই কারণে এবং তিনি অনেকেরই গুরুমহাশয় ও কুলীন বলিয়া, সকলেই তাঁহাকে মান্য করিতেন। কিন্তু তাঁহার ভগিনীদ্বয় অত্যন্ত দুর্বৃত্তা ও প্রখরা ছিলেন। যদি তিনি কোন স্ত্রীকে আপন বাটীতে আনিয়া রাখিতেন, তাহা হইলে তাঁহার ভগিনীদ্বয় তাহার দ্রব্যাদি লইয়া বাটী হইতে বহিষ্কৃতা করিয়া দিতেন। তিনি ভয়ে ভগিনীদ্বয়কে কখন কিছু বলিতে সাহস করিতেন না। একবার আমরা স্বচক্ষে দেখিয়াছি, মেদিনীপুরের সন্নিহিত পাথরার অল্পবয়স্ক পরমাসুন্দরী কনিষ্ঠ পত্নীকে আনিয়া বাটীতে রাখিয়াছিলেন। তাঁহার ঐ স্ত্রী, পিত্রালয় হইতে আসিবার সময়, যথেষ্ট দ্রব্যাদি সমভিব্যাহারে আনিয়াছিলেন। কিছুদিন পরে তাঁহার ভগিনীদ্বয়, দ্রব্যাদি আত্মসাৎ করিয়া, ঐ অল্পবয়স্কা ভ্রাতৃজায়াকে বাটী হইতে বহিষ্কৃত করিয়া দেয়। তাহা দেখিয়া, তিনি ভগিনীদ্বয়ের ভয়ে কোন কথা বলিতে সাহস করেন নাই। তাঁহার অন্যান্য স্ত্রী বীরসিংহায় আসিলে, তাহাদের প্রতিও এইরূপ নিষ্ঠুর ব্যবহার করিতেন।

 অগ্রজ, ঐ দুইটি স্ত্রীলোককে দেখিয়া ভোজনে বিরত হইলেন, এবং উহাদিগকে বলিলেন, “তোমরা উভয়ে কিজান্য আসিয়াছ, তাহা বল।” বুদ্ধ বলিলেন, “আমি তোমার বাল্যকালের শিক্ষক মহাশয়ের প্রথম-বিবাহিতা স্ত্রী, আর এইটা আমার গর্ভসম্ভৃত কন্যা। এই কন্যার পতি কুলীন। তিনি