প্রায় চল্লিশটী কন্যার পাণিগ্রহণ করিয়াছেন; এবং যে স্ত্রীর জনকজননীর নিকট খোরাকীর টাকা প্রাপ্ত হন, সেই স্ত্রীকেই গৃহে রাখেন। আমাদের নিকট কিছুই পাইবার আশা নাই; একারণ, আমার কন্যাকে লইয়া যান না। বৎসরের মধ্যে একবার জামাতাকে আনিতে হইলেও দশ টাকা ব্যয় হয়, তাহাও আমাদের ক্ষমতা নাই। কুলীন জামাতার, কন্যাকে প্রতিপালন করিবার কথা নাই। অগত্যা কন্যাটী আমার নিকটেই অবস্থিতি করে। আমি এখান হইতে তিন ক্রোশ দূরে পিত্রালয়ে যাবজ্জীবন অবস্থিতি করিয়া থাকি। আমার পুত্ত্র, কষ্টে সংসারযাত্রা নির্ব্বাহ করিয়া থাকে। এক্ষণে পুত্ত্রটী বলিতেছেন, অতঃপর আমি তোমাদের দুইজনকে অন্নবস্ত্র দিতে পারিব না। ইহা শুনিয়া আমি পুত্ত্রকে বলিলাম, বল কি বাবা! তুমি এরূপ বলিলে, আমরা কোথায় যাই? তাহাতে পুত্র বলিল, তুমি জননী, না হয় তোমাকে অন্ন দিতে পারি, কিন্তু ভগিনীকে খেতে দিতে পারিব না। ইহা শুনিয়া আমি বলিলাম, কুলীন কর্ত্তৃক বিবাহিত কন্যা চিরকাল ভ্রাতার বাটীতেই থাকে। আমার কথা শুনিয়া পুত্র বলিল, সে যাহা হউক, তোমাকেই খেতে দিব, তুমি উহার বন্দোবস্ত কর। ইহা শুনিয়া আমি রাগ করিয়া বলিলাম, তুমি খেতে দিবে না, তবে কি প্রসন্ন বেশ্যাবৃত্তি অবলম্বন করিয়া দিনপাত করিবে? তাহাতে পুত্র বলিল, উহার যাহা ইচ্ছা তাহাই করুক। তদুপলক্ষে উপযুক্ত পুত্রের সহিত আমার বিলক্ষণ মনান্তর ঘটিল। পুত্রের এইরূপ কথা শুনিয়া চতুর্দ্দিক এককালে অন্ধকারময় দেখিলাম।
কি করি, ভাবিয়া কিছুই স্থির করিতে পারিলাম না। অবশেষে শুনিলাম, আমার মাসতুত ভ্রাতার বাটীতে একটী পাচিকার আবশ্যক হইয়াছে। কন্যাটী লইয়া তথায় যাইলাম; কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্যবশতঃ তাঁহারা বলিলেন যে, চারি দিবস। অতীত হইল আমাদের বাটীতে পাচিকা নিযুক্ত হইয়াছে। কি করি, কোথা যাই, এই ভাবিতে লাগিলাম। মনে হইল, শুনিয়াছি গঙ্গাতীরে একটি গ্রামে স্বামীর এক সংসার আছে, তথায় এক সপত্নীপুত্র ব্যবসা-উপলক্ষে