পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/২৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বাধীনাবস্থা।
২৩৯

তিনি পুনর্ব্বার পিতৃদর্শনার্থে কাশী গমন করেন; তথায় প্রায় কুড়ি দিবস অবস্থিতি করিয়া কলিকাতায় প্রত্যাগমন করেন। ঐ বৎসর মাঘ মাসে পিতৃদেব অতিশয় পীড়িত হন। তারে বীরসিংহায় সংবাদ পঠাইয়া, আমাকে কাশী যাইবার সংবাদ লিখিয়া, স্বয়ং ত্বরায় কাশী যাত্রা করেন। অগ্রজের আদেশ পাইবামাত্র, আমি কাশী যাত্রা করি। পিতৃদেব কিছু সুস্থ হইলে, দাদা, আমাকে ও জ্যেষ্ঠ ভগিনী মনোমোহিনীকে তথায় রাখিয়া, স্বয়ং কর্ম্মটার হইয়া কলিকাতা প্রত্যাগমন করেন।

 ১৮৭২ সালের জুন মাসে হিন্দু ফিমেলয়্যানিউটিফণ্ড স্থাপিত হয়। অনরেবল জষ্টিস্ বাবু দ্বারকানাথ মিত্র মহোদয় ও অগ্রজ মহাশয় উহার ট্রাষ্ট্রী মনোনীত হন। অল্পদিনের মধ্যেই এই ফণ্ডের বিশেষ উন্নতি করেন। অনারেবল দ্বারকানাথ মিত্রের মৃত্যুর পর, এক ট্ৰষ্ট্ৰী-পদে থাকা উচিত নয় বিবেচনা করিয়া, অন্য ব্যক্তিকে ট্ৰষ্ট্ৰী-পদে মনোনীত করেন। হিন্দু ফিমেলয়্যানিউটি ফণ্ডের ডাইরেক্টারদের বিসদৃশ কার্য্যকলাপ দেখিয়া, সবসক্রাইবার সমূহকে জানাইয়া, ১২৮২ সালের ফাল্গুন মাসে সকলেই ট্ৰষ্ট্ৰীপদ পরিত্যাগ করেন।

 কিছুদিন পূর্ব্বে এক গণককার বলিয়াছিলেন, সন ১২৮২ সালের ১৪ই চৈত্র হইতে জননীদেবীর মৃততিথিমধ্যে পিতৃদেবের মৃত্যু হইবে। ১৪ই চৈত্র একবার ভেদ হইয়া নাড়ী দমিয়া যায়; সুতরাং তারে সংবাদ দিয়া অগ্রজ মহাশয়কে আনান হয়।

 সন ১২৮৩ সালের ১লা বৈশাখ সূর্য্যাস্তসময়ে পিতৃদেব কাশীলাভ করেন। পিতার মৃত্যু দেখিয়া, দাদা রোদন করিতে লাগিলেন। তৎকালে বিস্তর আত্মীয় বন্ধুবান্ধব উপস্থিত ছিলেন। দাদা, জাঁকজমক ভাল বাসেন না। উপস্থিত ভদ্রলোক সমূহকে বিদায় দিলেন এবং প্রকাশ্যভাবে বলিলেন, “আমাদের পিতাকে আমরাই বহন করিয়া লইয়া যাইব; অন্য ভদ্রলোকদিগকে ক্লেশ দিব না।” এই বলিয়া, তিন সহোদর ও কনিষ্ঠের শুশ্বর প্রতাপচন্দ্র কাঞ্জিলাল মহাশয়, এই চারিজনে বহন করিয়া লইয়া যাই। পুরোহিত