পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
বিদ্যাসাগর-জীবনচরিত।

শাস্ত্রে বিশিষ্টরূপ অধিকার ছিল। নচেৎ চারি বৎসরের মধ্যে দর্শনশাস্ত্রে এরূপ কাহারও অধিকার হইতে পারে না।”

 ঐ সময় বড়বাজারের বাবু জগদ্দুর্লভ সিংহের যে বাটীতে আমাদের বাসা ছিল, তাঁহার অবস্থা অত্যন্ত হীন হওয়ায়, ঐ বাটীর সদরের সমস্ত গৃহ তনসুকদাস হিন্দুস্থানীকে ভাড়া বিলি করা হইয়াছিল। অন্তঃপুরস্থ নিম্ন-গৃহে, সিংহবাবু আমাদের বাসা অবধারিত করিয়া দেন। নিম্ন-গৃহে অবস্থিতি-প্রযুক্ত অগ্রজ মহাশয় পীড়িত হইলেন। চিকিৎসকগণ পিতৃদেবকে বলিলেন, “কলিকাতায় নিম্ন-গৃহে—বিশেষতঃ বড়বাজারে অবস্থিতি করা রোগীর পক্ষে কদাপি উচিত হয় না। নিম্ন-গৃহে শয়ন-প্রযুক্ত ইতঃপূর্ব্বে‌ ইনি একবার বিষম রোগাক্রান্ত হইয়া, অনেক কষ্টে আরোগ্যলাভ করেন। তথাপি আপনারা ওরূপ গৃহ পরিত্যাগ করেন না। ওরূপ গৃহে শয়ন করিলে, নিশ্চয়ই মৃত্যুমুখে নিপতিত হইবেন। রাত্রিতে সমস্ত শয্যা যেন জলসিক্ত বোধ হইয়া থাকে; অতএর যত শীঘ্র পারেন, আপনারা এই গৃহ পরিত্যাগ করুন।” এই সকল নানা কারণে বড়বাজারের বাসা পরিত্যাগপূর্ব্ব‌ক, বহুবাজারের পঞ্চাননতলায় আনন্দচন্দ্র সেনের বাটীতে বাসা স্থির হইল। সেই বাটীর মধ্যে স্বতন্ত্র গৃহে দেশস্থ বিশ্বম্ভর ঘোষ ও যশোদানন্দন ঘোষ প্রভৃতি অবস্থিতি করিতেন। দেশস্থ লোকসহ একত্র এক বাটীতে অবস্থিতি করায়, বিশেষ সুবিধা বোধ হইয়াছিল।

 ইহার কিয়দ্দি‌বস পরে, আশ্বিন মাসে, অগ্রজ মহাশয় অসুস্থতা-নিবন্ধন দেশে প্রস্থান করেন। মধুসূদন তর্কালঙ্কার সংস্কৃত কলেজের এসিষ্টাণ্ট সেক্রেটারি ও ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের সেরেস্তাদায় পণ্ডিত অর্থাৎ প্রধান পণ্ডিতের পদে নিযুক্ত ছিলেন। কার্ত্তিক মাসে তর্কালঙ্কারের মৃত্যু হইলে, ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের ঐ পদ প্রাপ্ত্যভিলাষে অনেকেই মার্শেল সাহেবের নিকট আবেদন করিতে লাগিলেন। বহুবাজারের মলঙ্গা-নিবাসী বাবু কালিদাস দত্ত মহাশয়, অপর এক পণ্ডিতকে ঐ পদ দেওয়াইবার আশয়ে,