পাতা:বিদ্যাসাগর জীবনচরিত - শম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ন.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চাকরি।
৯৩

বাল্যকালে পাঠশালায় সামান্য শিক্ষা করিত; তাহার পর অর্থের অসদ্ভাবপ্রযুক্ত কলিকাতায় লেখাপড়া শিক্ষার জন্য যাইতে সম্পূর্ণরূপ অক্ষম হইত। তজ্জন্য যাহাতে গবর্ণমেণ্টের দ্বারা দেশে দেশে বিদ্যালয় স্থাপিত হয়, তদ্বিষয়ের উপায় নির্দ্ধারণের জন্য সাহেবের সহিত প্রায়ই আন্দোলন হইত। সাহেব, মফঃস্বলের স্থানে স্থানে বিদ্যালয় স্থাপনজন্য গবর্ণমেণ্টকে উত্তেজিত করিতেন। তাঁহার কথাতেই তৎকালীন গবর্ণর জেনারেল লর্ড ডালহৌসি কর্ণপাত করিয়াছিলেন। তাহাতেই যে দেশের এরূপ উন্নতি হইয়াছে, তাহার সন্দেহ নাই। তিনি আর কিছুদিন জীবিত থাকিলে, না জানি দেশের কতই উন্নতিলাভ হইত। ভারতবর্ষের দুর্ভাগ্য-প্রযুক্ত, বেথুন মহোদয় ইহজগৎ পরিত্যাগ করিলেন। অনন্তর মৃতদেহ সমাধিস্থানে নীত হইল; হেলিডে সাহেব ও অগ্রজ মহাশয়, উভয়ে এক শকটে আরোহণ করিলেন, বিদ্যালয় সমূহের প্রায় সহস্রাধিক ছাত্রগণ সমবেত হইয়া, সমাধিস্থানে সমুপস্থিত হইলেন।

 অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সমাপনান্তে সকলে ম্লানবদনে স্ব স্ব গৃহে প্রত্যাগমন করিলেন। অনন্তর গবর্নর জেনারেল বাহাদুর, বেথুন-ফিমেল-স্কুলের ভার স্বহস্তে লইয়া, তৎকালীন হোমডিপার্টমেণ্টের সেক্রেটারি সিসিল বীডন সাহেব মহোদয়কে এই বিদ্যালয়ে প্রেসিডেণ্ট এবং বিদ্যাসাগর মহাশয়কে পূর্ব্বের মত অবৈতমিক সেক্রেটারির পদে নিযুক্ত করিলেন। তাঁহার আন্তরিক যত্ন ও অধ্যবসায়ে, ক্রমশঃ বালিকাবিদ্যালয়ের উন্নতি হইতে লাগিল। যাঁহারা উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান বিদ্বেষ্টা ছিলেন, বিদ্যাসাগর মহাশয় ক্রমশঃ তাঁহাদিগকে কমিটী করিয়া উপদেশ দিয়া, তাঁহাদের বাটীর (অর্থাৎ সভাবাজারস্থ রাজা কালীকৃষ্ণ বাহাদুর প্রভৃতির বাটীর) বালিকাগণকেও বেথুনফিমেল-স্কুলে প্রবিষ্ট করিয়া দিলেন। সর্বপ্রথমে ভারতবর্ষে স্ত্রীশিক্ষা-প্রচারবিষয়ে বিদ্যাসাগর মহাশয়ই বেথুন সাহেবকে প্রবৃত্ত করেন। ফলতঃ বিদ্যাসাগর মহাশয় আন্তরিক যত্ন না করিলে, তৎকালে এতদ্দেশে স্ত্রীশিক্ষা