পাতা:বিপ্লবী কানাইলাল - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পেরেছিলেন। এই অর্থসংগ্রহ ব্যাপারেই মতিলাল রায়ের স্পর্শে আসতে হয় কানাইলালকে। তখন মাঘ কিংবা ফাল্গুন মাস। জ্যোৎস্না রাত্রি। কানাইলাল মতিলাল রায়ের বাড়ীতে এসে গল্প আরম্ভ করে দিলেন। অনেকক্ষণ পর তাঁরা রাস্তায় বেরিয়ে এলেন। পথে পায়চারী করে বেড়াতে বেড়াতে কথা হতে লাগল। দেশের কথা, সমাজ মঙ্গলের কথা হতে হতে শেষে কানাইলাল স্পষ্টস্বরে বললেন, এই আমাদের দেশ, এর স্বাধীনতা চাই, এবং তার উপযুক্ত ব্যবস্থাও হচ্ছে, খবর রাখ কি? মতিলাল রায় তখন বিপ্লব মন্ত্রে দীক্ষা নেন নি, সামান্য ছাত্র মাত্র, দেশের কল্যাণ কামী মাত্র। কানাইলালের প্রশ্নের প্রতিটি শব্দে যেন বিশ্বাস আর নিষ্ঠার আগুন জ্বলে উঠল। মতিলাল রায় চকিত আনন্দে প্রশ্ন করলেন, ‘কোথায়? কে করছে?’ কানাইলাল বললেন, ‘সে কথা এখন বলব না। জেনে রাখ বঙ্কিমের ‘আনন্দ মঠ’ আজ আর স্বপ্ন নয়। অসংখ্য সন্তান একত্র হয়ে মাতৃমন্ত্রে দীক্ষা নিচ্ছে। আমিও যাবো, তোমারও সাহায্য চাই।” বোঝা গেল কানাইলাল মনস্থির করেছে। বারুদের স্তূপ উত্তপ্ত ও পুঞ্জীভূত হয়ে উঠেছে। বিস্ফোরণের আর বড় বেশি দেরী নেই।

 ইতিমধ্যে বাংলার নানাস্থানে কয়েকটি বৈপ্লবিক হত্যাপ্রচেষ্টা সংঘটিত হয়ে গেছে। সেই সময়কার অবস্থার বর্ণনা দিচ্ছেন উপেন্দ্রনাথ—‘মাণিকতলার বাগানে যখন আশ্রমের

৪৫