পাতা:বিপ্লবী কানাইলাল - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ওপর নিষ্ঠার অভাব থাকায় তারা সফলকাম হয় না। তাঁর মুখের কথা তিনি জীবনে হাতে কলমে প্রমাণ করে দিলেন। সকল্পের জোর থাকলে সবই সম্ভব তা তিনি সকলের চোখের সামনে সম্ভব করে দেখালেন। কানাইলাল বলেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আপাততঃ কোন চার্জ না থাকলেও তাঁর সঙ্গীদের যে দশা হবে তিনি নিজেও তাই বরণ করে নেবেন। দলের মধ্যে মাত্র কয়েকজনের ফাঁসির দণ্ড হয়েছিল—কানাইলাল হলেন সবার পথপ্রদর্শক। কানাইলাল তাঁর প্রিয় বন্ধু মতিলাল রায়ের সঙ্গে জেলের মধ্যে কথাবার্তা বলতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘মনে কোর না জেলে পচবার জন্যে এই কাজে নেমেছি, আন্দামানে বা ফাঁসিকাঠে নিরীহ মেষের মত প্রাণ দিতে জন্মেছি।’ সত্যনিষ্ঠ কানাইলালের মুখের কথা মিথ্যা হবার নয়। তিনি বাকসিদ্ধ।

 কানাইলালের অগ্রজ আশুতোষবাবু ফাঁসির হুকুম হবার পর জেলের মধ্যে যখন দেখা করতে গিয়েছিলেন,— আপীলের জন্য আবেদন করতে একবার অনুরোধ করতে গিয়েছিলেন তখন কানাইলাল তাঁর সঙ্গে এমনভাবে কথা বললেন যেন ফাঁসি হয়ে গেলে তাঁর কর্তব্য শেষ করে তিনি ছুটি পাবেন। দুজন ইউরোপীয় ওয়ার্ডার আশুবাবুকে বললে, He is a wonderful chap, he is always bright. আশুবাবু একবার কানাইলালের হাত দুটো স্পর্শ করবার জন্যে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। ওয়ার্ডাররা প্রথমে রাজী হয় নি। পরে তারা

৮৬