পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১০৭

অংশকে একত্রিত করিয়া একটি সাধারণ শিক্ষানীতির দ্বারা জনসাধারণের মধ্যে জাতীয় ভাবের প্রবর্ত্তন করিতে হইবে। সাধারণ বর্ণমালা প্রবর্ত্তনের বিষয় আমি পুনরায় বলিতেছি। যাহাতে পৃথিবীর অন্যান্য জাতির নিকটবর্ত্তী হইতে পারি আমাদিগকে এইরূপ একটি বর্ণমালা গ্রহণ করিতে হইবে। রোমান বর্ণমালা প্রবর্ত্তনের কথা বলিলে অনেকেই হয়ত আতঙ্কিত হইবেন; কিন্তু বৈজ্ঞানিক ও ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গীর দ্বারা আমি তাদিগকে এই সমস্যাটি বিবেচনা করিতে সনির্ব্বন্ধ অনুরোধ জানাইতেছি। দেশের শতকরা নব্বইজন লোক অশিক্ষিত এবং তাহারা কোন বর্ণমালার সহিত পরিচিত নহে। এইরূপ ক্ষেত্রে যে বর্ণমালাই প্রবর্ত্তন করি না কেন, তাহাতে তাহাদের কোন ক্ষতি হবে না। রোমান বর্ণমালা গ্রহণের ফলে তাহারা অনায়াসে আর একটি ইউরোপীয় ভাষা শিক্ষা করিতে পারিবে—এই বিষয়ে চিন্তা করিবার জন্য আমি দেশবাসীকে অনুরোধ করিতেছি। রাষ্ট্রভাষা সম্পর্কে আমার অভিমত এই যে, হিন্দী ও উর্দ্দুর মধ্যে পার্থক্য কৃত্রিম —সুতরাং, এতদুভয়ের সংমিশ্রণেই আমাদের রাষ্ট্রভাষার সৃষ্টি হওয়া উচিত।

 দারিদ্র্য দূরীকরণই পুনর্গঠনকার্য্যে আমাদের প্রধান ও প্রাথমিক কর্ত্তব্য হইবে। এতদুদ্দেশ্যে ভূমি-ব্যবস্থার আমূল সংস্কার ও জমিদারী প্রথার উচ্ছেদ প্রয়োজন। কৃষি-ঋণ মকুব করিতে হইবে এবং পল্লীবাসীদের জন্য অল্পসুদে অর্থসাহায্য প্রদানের ব্যবস্থা করিতে হইবে। উৎপাদক ও গ্রাহক উভয়ের সুবিধার নিমিত্ত সমবায় আন্দোলনের প্রসারের চেষ্টা করিতে হইবে। অধিকতর ফসল উৎপাদনের জন্য বৈজ্ঞানিক প্রথায় কৃষিকার্য্যের ব্যবস্থা করিতে হইবে।

 একমাত্র কৃষি-ব্যবস্থার উন্নতির দ্বারা জাতির অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হইবে না; রাষ্ট্রীয় অধিকারে ও রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীনে শিল্পবাণিজ্যের প্রসারও প্রয়োজন। ভারতের অভ্যন্তরে বৈদেশিক শাসন