পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৭১

বলিয়াই তিনি বারংবার হাই কমাণ্ডের সহযোগিতা প্রার্থনা করিতে লাগিলেন। সুভাষচন্দ্র যে একদলীয় ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করিতে সম্মত হন নাই—আপাত-দৃষ্টিতে অনেকের নিকট দুর্ব্বলতাপ্রসূত বলিয়া মনে হইলেও ইহা তাঁহার বিশেষ রাজনৈতিক দূরদর্শিতার পরিচায়ক। দুই বিরুদ্ধ দলের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করিয়া কংগ্রেসকে ও জাতীয় আন্দোলনকে অধিকতর শক্তিশালী করিয়া তুলিবার উদ্দেশ্যে সুভাষচন্দ্র দক্ষিণপন্থীদের দ্বারস্থ হওয়াই যুক্তিযুক্ত বিবেচনা করিয়াছিলেন। ত্রিপুরী অভিভাষণে সুভাষচন্দ্র বৃটিশ গভর্ণমেণ্টের নিকট চরম পত্রের আকারে জাতীয় দাবী পেশ করিবার যে সঙ্কল্প জানাইয়াছেন সেই চরম পত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হইলে ব্যাপক গণ-আন্দোলন অবশ্যম্ভাবী হইয়া উঠিবে। সেই গণ-আন্দোলন ব্যাপক আকারে সম্ভব হইতে পারে যদি কংগ্রেসের নির্দ্দেশ ও নেতৃত্বের পিছনে সমস্ত রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় সমর্থন ও সহযোগিতা থাকে। এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্যই সর্ব্বদলীয় মন্ত্রীসভার উপযোগিতা ও প্রয়োজন অপরিহার্য্য। অপরপক্ষে একদলীয় মন্ত্রীসভার দ্বারা এই উদ্দেশ্য সিদ্ধ হইতে পারে না। সর্ব্বদলীয় মন্ত্রীসভা গঠনের পক্ষে ইহই সুভাষচন্দ্রের অন্যতম প্রধান যুক্তি।

 মহাত্মা গান্ধী যখন কার্য্যতঃ সুভাষচন্দ্রকে নিজ মতানুযায়ী কর্মপরিষদ গঠন করিতে পরামর্শ দিলেন তখন যদি তিনি সেই পরামর্শানুসারেই মন্ত্রীসভার সভা মনোনয়ন করিতেন তাহা হইলে সুভাষচন্দ্র গান্ধীজীর নির্দ্দেশের অনুরূপ কাজ করিতেন বটে কিন্তু তাহাতে পন্থ-প্রস্তাবের সর্ত্ত সম্পূর্ণরূপে রক্ষিত হইত না। পন্থ-প্রস্তাবের সর্ত্তানুসারে কেবল ওয়ার্কিং কমিটি গঠনে গান্ধীজীর নির্দ্দেশ লইলেই চলিবে না, ওয়ার্কিং কমিটির সভ্যগণ গান্ধীজীর আস্থাভাজন হওয়া চাই। কিন্তু মহাত্মাজী যখন সুভাষচন্দ্রকে তাঁহার Vote of Confidence দেন নাই তখন সুভাষচন্দ্রের মনোনীত সভ্যরা গান্ধীজীর আস্থাভাজন হইবে ইহা বলা চলে না। কংগ্রেসের পরবর্ত্তী