পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩১২
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

হয় যে, পূর্বএশিয়া-প্রবাসী ভারতীয়গণের পক্ষে স্বাধীনতা আন্দোলন আরম্ভ করিবার ইহাই প্রকৃষ্ট সময়; এই স্বাধীনতা হইবে পূর্ণস্বাধীনতা এবং সকল প্রকার বৈদেশিক শাসন ও নিয়ন্ত্রণ হইতে সম্পূর্ণ মুক্ত; ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান এবং ক্রিয়াকলাপের অধিকারী হইতে পারিবে কেবলমাত্র ভারতীয়গণের নেতৃত্বে এবং ভারতীয় স্বার্থে চালিত স্বাধীন-ভারত বাহিনী বা আজাদ হিন্দ ফৌজ। সকল ক্ষমতা আজাদ হিন্দ সঙ্ঘ পরিচালিত করিবে; আজাদ হিন্দ সঙ্ঘের একটি কর্মপরিষদ থাকিবে; এই কর্মপরিষদ সামরিক প্রয়োজনে জাপানের নিকট হইতে নৌবল, বিমানবল প্রভৃতি চাহিতে পারেন, ইত্যাদি। এই সম্মেলন আরও একটি উল্লেখযোগ্য প্রস্তাব করেন যে, ভারতের ভবিষ্যৎ শাসনতন্ত্র রচনা করিবার অধিকার ভারতভূমিতে স্বয়ং ভারতীয় নেতৃবৃন্দের উপরই বর্তিবে। ভারতের জাতীয় কংগ্রেসই সেই অধিকারের মালিক। এই সম্মেলনে স্থির হয় যে, আরও ব্যাপক ভিত্তিতে ব্যাংককে একটি প্রতিনিধি সম্মেলন আহ্বান করিতে হইবে এবং তথা হইতেই সরাসরিভাবে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ঘোষণা করা হইবে।

 এই প্রস্তাব অনুসারেই ১৯৪২ সালের ১৫ই হইতে ২৩শে জুন পর্য্যন্ত ব্যাংককে একটি প্রতিনিধি সম্মেলন বসে। জাপান, মাঞ্চুকুও, হংকং, বার্মা, বোর্ণিও, জাভা, মালয় ও শ্যাম হইতে ১০০ জন প্রতিনিধি সমবেত হন। ভারতীয় বাহিনী হইতেও প্রতিনিধি আসেন (ইঁহারা যুদ্ধবন্দী)। এই সম্মেলনে আজাদ হিন্দ আন্দোলনের মূল নীতি নির্ধারিত হয়; যথা—

 ১। ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য পূর্ব এশিয়ার প্রবাসী ভারতীয়গণকে লইয়া একটি আজাদ হিন্দ সঙ্ঘ গঠন করিতে হইবে।

 ২। আজাদ হিন্দ্ সঙ্ঘের আদর্শ, কার্যক্রম ও সকলপ্রকার পরিকল্পনা ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের আদর্শ, কার্যক্রম ও উহার পরিকল্পনা অনুযায়ী