পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

পারিবে না। যুব-আন্দোলন এই অভাব পূর্ণ করিবে। যুব-আন্দোলনের বিশেষত্ব ও স্বাতন্ত্র্য এখানেই।

 যুব-আন্দোলনের পরিধি জীবনের মতই ব্যাপক। শরীরকে সঞ্জীবিত করিতে হইলে আমাদিগকে ক্রীড়া-কৌতুক ও ব্যায়াম করিতে হইবে— হৃদয়কে মুক্ত ও নবশিক্ষাদ্বারা উদ্বুদ্ধ করিতে হইলে নূতনতর সাহিত্য, উচ্চতর ও উৎকৃষ্টতর শিক্ষাপ্রণালী ও সুদৃঢ় নৈতিকতার প্রতিষ্ঠা করিতে হইবে—সমাজকে নবজীবন দান করিতে হইলে চিরাচরিত আচার ব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করিয়া নূতন সমাজ ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা ও বলিষ্ঠ ভাবধারার প্রবর্তন করিতে হইবে। যুগোচিত আদর্শের আলোকে বর্ত্তমান সামাজিক ও নৈতিক ব্যবস্থা ও বিধানসমূহ যাচাই করিয়া লইতে হইবে—এইরূপ নৈতিক ও সামাজিক আদর্শের প্রবর্ত্তন করিতে হইবে যাহা ভবিষ্যতের পথকে সুনির্দ্দিষ্ট ও সুনিয়ন্ত্রিত করিবে।

 যুব-অন্দোলন বর্ত্তমানের প্রতি অসন্তোষের প্রতীক। যুগ-সঞ্চিত সংস্কারের মোহবন্ধন, পথনিরোধকারী আচার ও বিধানের নাগপাশ, স্বেচ্ছাচারিতা ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ইহা একটি বিশিষ্টরূপ। সকল শৃঙ্খল মোচন করিয়া মানবের অফুরন্ত সৃজনীশক্তির স্বাভাবিক বিকাশ লাভের সহজ পথ উন্মুক্ত করিয়া দিয়া মানব জাতির জন্য নূতনতর জগতের প্রতিষ্ঠাই ইহার লক্ষ্য। অতীতের ও বর্ত্তমানের দুর্লঙ্ঘ্য বাঁধা অতিক্রম করিয়া ভবিষ্যতের পানে, সম্মুখের দিকে ছুটিয়া চলা, সুদূরের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করা—ইহাই যৌবন-ধর্ম। যুব-আন্দোলনের প্রকৃতিগত এই বৈশিষ্ট্যটি না থাকিলে কেবলমাত্র যুবক-যুবতীর সংঘ হইলেই কোন প্রতিষ্ঠান যুবক-সমিতি আখ্যা পাইতে পারে না। যুবসমিতিকে সেবা-সমিতির নামান্তর বলিয়া মনে করিলেও ভুল হইবে—কংগ্রেস কমিটির নাম ও label পরিবর্ত্তন করিয়া যুব-সমিতি গঠন করিলে চলিবে না। যুব-আন্দোলন দায়িত্বজ্ঞানহীন যুবক-যুবতীর লক্ষ্যহীন