পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSO বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গল্প পাঁচ বছর আগে যতটা গাঁথা দেখে গিয়েছিলাম, গাঁথনির কাজ তার বেশী আর একটাও এগোয়নি, বনে জঙ্গলে একেবারে ভৰ্ত্তি, ইটের গাঁথনির ফাঁকে বাটঅশখের বড় বড় চারা ! আহা ভঙুলমামা বোধ হয় টাকা পাঠাতে পারেনি। जादू । ভাণ্ডুলামামার সম্পবন্ধে সেবার অনেক কথা শািনলাম। ভন্ডুলামামা লালমণিরহাটে নেই, শান্তােহারে বদলি হয়েচে । তার এখন দই ছেলে, দাই মেয়ে । বড় ছেলেটি আমারই বয়সী, ভন্ডুলমামার মা সম্প্রতি মারা গিয়েচে । বড় ছেলেটির পৈতে হবে সামনের চৈত্র মাসে । সেই সময়ে ওরা দেশে আসতে পারে । কিন্তু সেবার চৈত্র মাসের অনেক আগেই দেশে ফিরলাম, ভঙুলমামার সঙ্গে দেখার যোগাযোগ হয়ে উঠল না । বছর তিনেক পরে । দোলের সময় । মামার বাড়ী দোলের মেলা খব বিখ্যাত। নানা জায়গা থেকে দোকানপসারের আমদানি হয়। আমি মায়ের কাছে আবদার শার করলাম, এবার আমি একা রেলে চড়ে মেলা দেখতে যাব মামার বাড়ী । আমায় একা ছেড়ে দিতে বাবার ভয়ানক আপত্তি, অবশেষে অনেক কান্নাকাটির পর তাঁকে রাজী করানো গেল । সারাপথ সে কি আনন্দ । একা টিকিট ক’রে রেলে চড়ে, মামার বাড়ী চলেচি, । জীবনে এই সর্বপ্রথম একা বাড়ীর বার হয়েচি সেই আনন্দেই সারাপথ আত্মহারা। কিন্তু এ সখি সইল না। মামার বাড়ীর স্টেশনে নেমেই কি রকম হোঁচটি খেয়ে প্লাটফর্মের কাঁকারের উপর পড়ে গিয়ে আমার হাঁট ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেল। অতি কন্টে মামার বাড়ী পৌঁছে বিছানা নিলাম। পরদিন সকালে উঠতে গিয়ে দেখি আর উঠতে পারিনে-দাই হাঁটাই বেজায় টাটিয়েচে, সঙ্গে সঙ্গে জৰাঁর। কোথা দিযে দোল কেটে গেল টেরও পেলাম না । দিদিমাকে অনরোধ করলাম, বাড়ীতে যেন তাঁরা চিঠি না লেখেন যে আমি আসবার সময় সেন্টশনে পড়ে গিয়ে হাঁট কেটে ফেলোচি। সেরে উঠে৷ বেড়াতে বেরিয়ে একদিন দেখি ভন্ডুলামামার বাড়ীটা অনেকদর গাঁথা হয়ে গেছে। কাঠ-থামাল পৰ্যন্ত গাঁথা হয়েচে, কিন্তু কড়ি এখনও বসানো হয়নি । হঠাৎ এত খাশি হয়ে উঠলাম যে আছাড় খেয়ে হাঁট কাটার কথা টের পেলে বাবা কি বলবেন, তখনকার মত সে দাঁশ্চিন্তা মন থেকে মাছে গেল। উৎসাহে ও কৌতুহলে এক দৌড়ে ভঙ্গুলমামার বাড়ীতে গিয়ে হাজির ৷ গাঁথনি অনেকদিন বন্ধ আছে মনে হলো, গত বিষরি পরে বোধ হয়। আর মিস্ত্রি আসেনি। ঘরের মেজেতে খািব জঙ্গল গজিয়েছে, গাঁথনির ফাঁকে ফাঁকে আমবাল শাকের গাছ ; বাড়ীর উঠোনে বড় একটা সজনে গাছে প্রথম ফালািগনে ফলের খই ফটেচে। ঘরে ঘরে দেখলাম, ভন্ডুলমামার বাড়ীতে তিনটে ঘব, একটা ছোট দালান, মাঝে একটা সিড়ির ঘর, আট-দশ ধাপ সিড়ি গাঁথা হয়ে গেছে। ওদিকের বড় ঘরটা বোধ হয়। ভন্ডুলামামার, মাঝের ঘরটাতে ছেলেমেয়েরা থাকবে। ভ"ডুলামামার বাপ আছে ? কে জানে । তিনি বোধ হয় থাকবেন সিড়ির