পাতা:বিভূতি বীথিকা - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গঙ্গাচরণ চুপ করে রইল, এ কথায় সায় দিলে পাড়ায় লোকে তার ওপর চটে যাবে, সবাইকে নিয়ে বাস করতে হবে যখন, কাউকে সে চটাতে চায় না । সভা বেশিক্ষণ চললো না । বিশ্বাস মশায়ের কাছে যারা দরধার করতে এসেছিল, সবাই বুঝলে এখানে ডাল গলানো শক্ত। যে যার বাড়ী চলে গেল। গঙ্গাচরণ সুযোগ পেয়ে বললে--বিশ্বাস মশায়, আমি কি না খেয়ে মরবো ? -কেন ? -বাজারে চাল অমিল। আর দু'দিন পরে উপোস শুরু হবে। কি করি পরামর্শ দিন । -আমার বাড়ী থেকে দু’কাঠা চাল নিয়ে যাবেন। -- তা দিয়ে কদিন চলবে বলুন ? -কেন বলুন ? — আমার বাড়ীর পুষ্যি দু’তিন জন। ও দু'কাঠা চাল নিয়ে ক’দিন খাবো ? আমার স্থায়ী একটা ব্যবস্থা না করলে এই বিপদের দিনে আমি কোথায় যাই ? পাঠশালা চালাই কি খেয়ে ? --অামার ধানচাল থাকতো তো বলতে পারা যেতো। কিন্তু আমার তা নেই। আজি দু’কাঠা চাল নিয়ে যান দিচ্চি - গঙ্গাচরণ চাল নিয়ে চলে গেল । সে রাত্রে বিশ্বাস মশায় আহারাদির পর পুকুরপাড থেকে গরু আনতে গিয়েছেন, কারণ সেখানেই তার গোয়াল-এমন সময় দুজন লোককে গাছের আড়ালে দেখে বলে উঠলেন-ওখানে কে ? --তোর বাবা সঙ্গে সঙ্গে তারা এসে বিশ্বাস মশায়ের মাথায় সজোরে এক লাঠি বসিয়ে দিলে। এর পর ওরা তঁাকে পুকুরপাড়ের বাবলা গাছের সঙ্গে মোটা দড়া দিয়ে বেঁধে ফেললে। বিশ্বাস মশায়ের জ্ঞান রইল না বেশিক্ষণ, মাথার যন্ত্রণায় ও 2खolicउ । জ্ঞান হয়ে প্ৰথমেই দেখলেন সুৰ্যের আলো জানিলা দিয়ে এসে পড়েচে, তার বিধবা বড় মেয়ে তঁর মুখের ওপর ঝুকে পড়ে। কঁাদচে । বিশ্বাস মশায় বলে উঠলেন-ডাকাত ! ডাকাত ! বড় মেয়ে সৌদামিনী বললে-ভয় কি বাবা ? আমি-আমি যে -এই দ্যাখে। t