পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবাগত R・4 মরিয়া যাইবে । কিন্তু কলিকাতায় গিয়া সে খাইবে কি ? কোন উপায় তো দেখা যাইতেছে না। ইণ্ডিয়ান ড্রাগ সিক্তিকেটে আর চাকরী হইবার সম্ভাবনা নাই। তবুও একবার বস্ব মহাশয়কে গিয়া ধরিয়া দেখিলে কেমন হয় ? কিছু যদি না জোটে, তবে আহিরিটোলার ঘাটে সেই হাতকাটা তেলের ক্যানভাসার ছোকরার সঙ্গে দেখা করিয়া...তবে ছুরি দিয়া নিজের হাতটা ফালা ফালা করিয়া কাটা—এ বৃদ্ধ বয়সে, ক্যান্‌ভাসারের চাকুরীর মত সম্মানের চাকুরীর, আরামের চাকুরী আর নাই, কিন্তু হাত কাটিয়া দেখাইয়া জিনিস বিক্রয় করা ? ওতে মান সন্ত্রম থাকে না । தி: এভাবে গ্রামে বসিয়া থাকা জীবন নয়। চিরকাল কাজের মধ্যে থাকিয়া আজ বাচিয়৷ মরিয়া থাকা তাহার পোষাইবে না। গ্রামেও তো হাওয়া খাইয়া জীবনধারণ করা যায় না— কেহ কেহ তাহাকে সামনের বছর দু’এক বিম্বা ধান করিতে পরামর্শ দিল—কেহ বলিল, ডোবার ধারে জমিটা পড়ে আছে কেষ্ট খুড়ো, তোমারই পৈতৃক জমি, এই শীতকালে মানকচু লাগাও ওটাতে, তৰু হাটে হাটে কিছু ঘরে আসবে, সামনের শীতকাল লাগাৎ— কৃষ্ণলালের হাসি পায় । কলিকাতার রোজগার যে কি ধরণের, সেখানে ক্যান্‌ভাসারের কাজে মাসে যে টাকা এক সময় তাহার আয় ছিল, এখানে গোটা বছর ধরিয়া কচু, কুমড়া বেচিয়াও যে সে আয় হওয়া অসম্ভব—এই মূখ, অৰ্ব্বাচীনেরা তাহা কি করিয়া বুঝিবে ? অবশেষে সে একদিন বাক্স বিছান। বাধিয়া কলিকাতায় আসিয়া হাজির হইল। বঁাচিতে হয় তো ভাল করিয়াই সে বঁাচিবে ! ট্রেনে পুরানো ক্যানভাসারদের সঙ্গে দেখা । নবশক্তি ঔষধালয়, কবিরাজ অনঙ্গমোহন দেব, বিশ্বাস কোম্পানী—ইণ্ডিয়ান ড্রাগ সিণ্ডিকেট প্রভৃতি ফাৰ্ম্মের লোক সব। সবাই জানে, সবাই খাতির করে। —আরে, এই যে কেষ্টদা, আজকাল আর দেখিনে যে? —কেষ্টদা, কোথেকে ? বিয়েথfওয়া করলেন নাকি এ বয়সে ? —আজকাল কোন কোম্পানীতে আছেন (কণ্ঠদা ? দেখিনে ট্রেনে আর ? —জমিজমা দেখতে গেছলে ভায়া ? তা দেখবেই, তো, থাকলেই দেখে—আমাদের কোন চুলোয় কিছু নেই, যা করে এই বিশ্বাস কোম্পানী, হিংসে হয় তোমায় দেখে, দু'শো টাকা বছরের আয়ের সম্পত্তি ? বলে কি ! তবে তো তুমি— ইত্যাদি, ইত্যাদি। কৃষ্ণলালকে এ বিড়ি দেয়, ও পানের কেীট খুলিয়া সামনে ধরে । পুরাতন বন্ধুর দল। ইহাদের ফেলিয়া সে এতকাল ঘুমন্ত পুরীতে কাল কাটাইল যে কি ভাবিয়া ? এখানে কাজ আছে, আমোদ অাছে, পয়সা রোজগার অাছে, তারপর ইয়ে আছে । আর সে কোথাও