পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
বিলাত-প্রবাসী

ভারতবাসী আছেন। ইনি ঝন্‌ঝনে সংস্কারক। ইংরেজদের উপর খুব টান। এঁর রঙটা একেবারে নবজলধর-শ্যাম। কিন্তু আমার কাছে এর বায়নাখ্যা ভাঙ্গেন নাই। সেদিন আমি খোলাখুলি জিজ্ঞাসা করিলাম। ইনিও আমায় খুলে বল্লেন যে মাঝে মাঝে ছেলের দল একে তাড়া করে। আমার কপাল ভাল যে অতটা দুর্দ্দশা এখনও হয় নাই। ইংরেজের উপর বেশি টান বোলেই বুঝি এ র সঙ্গে এত টানাটানি। ইনি ইংরেজের মতন পোযাক করেন। তবে যেদিন নাইট ক্যাপ (Night-Cap) ছেড়ে কালো রঙের উপর লাল পাগ্‌ড়ি চড়ান সেদিন একেবারে—ত্রাহি মধুসূদন।

এই বিদ্যার পীঠস্থানে কতকগুলি মহাবিদ্যা আছেন―যাঁরা কেবল নূতন খুজে বেড়ান। এরা ভারতবাসীদের সঙ্গে ভাব করিতে বড় অভিলাষিণী। কেহ প্রবীণা কেহ প্রৌঢ়া কেহ মধ্যম-বয়স্কা কেহ বা যুবতী। এদের চালচলনে শীলের কোন অভাব নাই। কিন্তু দেশের সমাজ বা সমাজবন্ধন―এ দের ভাল লাগে না। ছট্‌কে বেরুতে পারিলে এরা বাঁচেন। আমায় দুই একবার নিমন্ত্রণ কোরেছিলেন। কথাবার্ত্তা আলাপ-পরিচয় সব হোলো কিন্তু আমি বড় ঘেস দিই না। সব সওয়া যায় কিন্তু যারা নিজের দেশের উপর চটা—যে দেশেরই তারা হোক না কেন―তাহাদিগকে সওয়া যায় না। এরকম পুরুষও অনেক আছে। ঊক্ষপারে যাঁরা বিদ্বান্ ও প্রতিষ্ঠাপন্ন—তাঁরা ভারতের উপর বিশেষ ভক্তিমান্ নহেন। তবে গুর্‌খা ও শিখ ভারি যোদ্ধা আর রাজা রাজোয়াড়রা রাজভক্ত—এইটুকু স্বীকার করেন।

মাইণ্ড (অর্থাৎ মনঃ) নামক একটি দার্শনিক পত্র আছে। যত বড়বড় ইংরেজ দার্শনিক তাঁরা সকলেই ইহাতে লিখেন। হিন্দু ব্রহ্মজ্ঞান―নামক আমার বক্তৃতাটি প্রবন্ধাকারে লিখে মাইণ্ডের