পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লাখনে w [ তাহার যুবক পুত্রের গাত্রে তৎকালে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার হীরাজহরতের অলঙ্কার শোভিত হইয়াছিল। র্তাহার এই অতুল সম্পত্তি তিনি যে ভারতীয় প্রজার রক্তশোষণ দ্বারা সংগৃহীত করিয়াছিলেন, তাহt Tennaut এর বিবরণী পাঠে জানা যায়। তিনি লখনে সম্বন্ধে লিথিয়াছেন— “I never witnessed so many varied forms of wretchedoess, fifth and vice,” offs of £54 to worকালিমালিপ্ত নগরী অামি আর কুত্ৰাপি দেখি নাই। তৎকালে খোজামিঞা আলমাসের শাসিত প্রদেশ ভিন্ন আসফ উদ্দৌলার অধিকৃত সমগ্র অযোধ্যারাজ্য শ্মশানভূমে পরিণত হইয়াছিল। আসফু, উদ্দৌলার পুত্র সয়াদং আলী খাঁ (১৭৯৮ খৃষ্টাব্দে) ইংরাজরাজের আনুগত্য স্বীকার করিয়াছিলেন । তিনি ইংরাজসেনার আশ্রয়ছয়ায় নিৰ্ব্বিমে নিদ্রিত থাকিয় ঐশ্বৰ্য্যমুখের ভোগবিলাস স্বপ্ন দেখিতেছিলেন। সয়াদৎ পূৰ্ব্বপুরুষদিগের স্যায় বলবীৰ্য্যে জাতীয় গৌরবের পুষ্টিসাধন না করিয়া ভোগবিলাসে উন্মত্ত হইয়াছিলেন । তিনি ইংরাজকরে স্বীয় সম্পত্ত্বির অৰ্দ্ধেকাংশ সমর্পণ করিয়া অবশিষ্ট লইয়াই আত্মতৃপ্তির পথে অগ্রসর হইলেন। মসজিদ, কূপ, দুর্গ, সেতু প্রভৃতি নিৰ্ম্মাণ দ্বারা রাজ্যের শ্ৰীবৃদ্ধি সাধন না করিয়া তিনি ভোগবিলাসের জন্ত উপযুপরি কএকটা প্রাসাদ নিৰ্ম্মাণ করান, ঐ প্রাসাদগুলি উত্তরোত্তর নূতন ভাবে ও নূতন প্রণালীতে গঠিত হইয়াছিল। তৎপরবর্তী রাজাদিগের অধিকারকালেও ঐরূপ প্রাসাদনিৰ্ম্মাণেরই প্রয়াস বাড়িয়াছিল। অট্টালিকার অধিকাংশ স্থলেই যুরোপীয় স্থাপিত্যশিল্পের অনুকরণ দৃষ্ট হয়। যে সয়দং খ ও তাহার বংশধরদ্বয় সামান্ত একট বাসভবনে থাকিয়া এই সৌভাগ্য অর্জন করিয়াছিলেন ; ইমামবাড়া, । চক্‌ ও বাজারাদির প্রতিষ্ঠাতা জাকজমকপ্রিয় যে আসফ উদৌল একটা মাত্র প্রাসাদ লইয়া সস্তুষ্ট ছিলেন, সেই বংশে সয়াদং আলী বহুসংখ্যক প্রাসাদ নিৰ্ম্মাণ করিয়া ভোগবিলাসের পরাকাষ্ঠা দেখাইয়। গিয়াছেন। এই বংশে নশার উদ্দীন হাইদার অপরিমিত অর্থব্যয়ে বাজপরিবার ও রাজমহিষীগণের জন্য কএকটা অত্যুৎকৃষ্ট প্রাসাদ প্রস্তুত করাইয়াছিলেন। তাহার | বিবাহিত-পত্নীগণ যে প্রাসাদে বাস করিতেন, তাহা ছত্রমঞ্জিল । নামে খ্যাত ৷ কৈসর-পসনা ও অন্তান্ত আলয়ে তাহার রক্ষিতা রমণীদ স্থান পাইয়াছিল। শাহমঞ্জিল নামক প্রসিদ্ধ ভবনপ্রাঙ্গণে তাহার কৌতুহল উদ্দীপনার্থ বন্ত পশুসমূহ | হইয়াছিল। নবাব স্বয়ং ফরহৎবক্স, হজুর বাগ, বিবিয়াপুর | ও অন্যান্ত প্রাসাদে বাস করিতেন । ওয়াজিদ আলী শাহ ৩৬০ জন রমণীকে পত্নীত্বে বরণ না করিয়া আশ্রিতারূপে স্বীয় বেগম ১৯৮ ]

লাখনৌ মহলে রক্ষা করিয়াছিলেন। উহাদের প্রত্যেকের জন্ত প্রাসাদ তুল্য অট্টালিকা নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। সয়াদং আলী থ ফরহৎবক্স নামক প্রমোদভবন নিৰ্ম্মাণ করাইয়া রাজপ্রাসাদ পরিবর্তন করিয়াছিলেন। তিনি ক্লিন্দুগণের বাসবিভাগের (হিন্দু টােলার ) পূৰ্ব্বাংশ হইতে লিখুম পৰ্য্যন্ত নগরবহিঃপ্রাস্তে কতকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাসাদ নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। ঐ গুলি বৰ্ত্তমান সেনানিবাসের উত্তরাংশে অবস্থিত। উহাদ্বারা নদীকূল, নগর ও তাহার চতুষ্পাশ্ববৰ্ত্তী স্থানের সৌন্দৰ্য দ্বিগুণ পরিবদ্ধিত হইয়াছিল। তৎপরে ওয়াজিদ আলী নদীতীরে কৈসর-বাগ নামক নন্দনকাননে দেবপুরী সদৃশ নানা শিল্পপূর্ণ অত্যুৎকৃষ্ট অট্টালিকা নিৰ্ম্মাণ করাইয়। তাহাই স্বীয় বাসভবনরূপে পরিণত করেন। তিনি পূৰ্ব্বোক্ত জেনারল মাটিনের নিকট হইতে এই প্রাসাদের নদীতীরবর্তী কতকাংশ ক্রয় করিয়া লন । পরে বহু অর্থব্যয়ে সেই সুরম্য হৰ্ম্ম্যের সংস্কারসাধন করিয়া তাহকে অভিনব ও স্বীয় অভিলষিত প্রাসাদে পৰ্য্যবসিত করিয়াছিলেন। উহার রাজদরবার গৃহ, অর্থাৎ যেখানে সুবিস্তৃত নানা শিল্পনৈপুণ্যমণ্ডিত রাজসিংহাসন প্রতিষ্ঠিত ছিল, উহা লালবার দ্বার বা কসর উষ, সুলতান নামে পরিচিত। ওয়াজিদের রাজত্বকালে লখনে নগরী চিত্র-বৈচিত্র্যের চরম সীমা প্রাপ্ত হইয়াছিল। যে দিন হইতে এই মুসলমান-রাজবংশ ইংরাজরাজের আনুগত্য স্বীকার করেন এবং যে সময় হইতে লখনেী নগরে ইংরাজ রেসিডেন্ট থাকিবার ব্যবস্থা হয়, তৎপরবর্তিকাল হইতেই কোন নবীন নবাবের রাজ্যাভিষেক সময়ে ইংরাজ-রেসিডেণ্ট আসিয়া তঁহাকে সিংহাসনে বসাইতেন এবং এই প্রদেশে তাহার রাজশক্তির প্রাধান্তজ্ঞাপনার্থ তাহাকে রাজনজর দিতেন । সয়াদং আলী খাঁর পুত্র গাজি উদ্দীন হাইদার ১৮১৪ খৃষ্টাব্দে অযোধ্যার রাজপদে অভিষিক্ত হন। তিনিই এ বংশে প্রকৃত রাজনামের অধিকারী হইয়াছিলেন। তিনি স্বীয় পিতার অনুষ্ঠিত মোতিমহল গম্বুজের চতুষ্পার্শ্বে মোতিমহল প্রাসাদ নিৰ্ম্মাণ করান। নদীর প্রাচীন নৌকা-সেতুর উভয় তীরবর্তী মুবারক মঞ্জিল ও শাহ মঞ্জিল নামক প্রাসাদ তাহার আগ্রহে সংস্কৃত হইয়াছিল । এই শেষোক্ত প্রাসাদে তিনি রোমক-সম্রাট গণের দ্যায় হ্রস্তু বন্ত পশুদিগের রণকৌতুক সন্দর্শন করিতেন । লখ নেী-রাজবংশের অবসান পৰ্য্যন্ত এই প্রাসাদে ভয়াবহ পাশব যুদ্ধ সংঘটিত হইয়াছিল। এতদ্ভিন্ন গাজি উদ্দীন হাইদার চানি-বাজর, সুপ্রসিদ্ধ 'ছত্রমঞ্জিল কলান ও তৎপশ্চাতে 'ছত্রমঞ্জিল খুৰ্দ্ধ’ নিৰ্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। তাহার সমাধির জন্ত তিনি গোমতীতীরে শাহ নজফ নামে