পাতা:বিশ্বকোষ বিংশ খণ্ড.djvu/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শব্দবিজ্ঞান [ ১৯৪ ] শব্দবিজ্ঞান বস্থায় সন্তানাদির মুখে যে শৰ শ্ৰত হওয়া যায়,তাহাকে অঙ্কুট বা অব্যক্ত বলা যায়। আবার ভিন্ন বস্তুর পরস্পর আঘাতে যে শব্দ উৎপন্ন হয়, তাছা অনাহত বা অব্যগু ধ্বনি । এই ব্যক্ত ও অব্যক্ত ধ্বনি আবার মধুর ও কঠোর ভেদে দুই প্রকার। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিয়মিত অনুরণন পরম্পর স্বারা মনুষ্যকণ্ঠে যে শ্রুতিমুখকর স্নিগ্ধ মঞ্জুল ধ্বনি উচ্চারিত বা অমুকৃত হয়, তাহার নাম মধুর এবং অনিয়মিত কালের মধ্যে অনিয়মিত সংখ্যক অনুরণন পরম্পরা দ্বারা মাধুর্য্যগুণবিহীন যে কর্কশ শব্দ সমুখিত করা যায়, তাহা শ্রীতিমুখ সমুৎপাদন করে না ৰলিয়! শ্রতিকঠোর বলিয়া উক্ত হইয়া থাকে, সঙ্গীতেই একমাত্র এইরূপ শঙ্কবিপর্যায় সংঘটিত হইতে দেখা যায়। জড় দ্রব্যের অণু সকলের বিকম্পন হেতুই শব্দ উখিত হয়। সেতার প্রভৃতি যন্থের তন্ত্রীতে আঘাত করিলে তারটা আন্দোলিত হয় এবং পরে উহার বেগ ক্রমশঃ ধীর হইয়া আইসে। তারের কম্পনের বৃদ্ধি ও তাহার ক্রমিক হ্রাস হইতে শব্দেরও উন্নতি বা অবনতির ক্রম অনুভূত হইয়া থাকে। শব্দায়মান দ্রব্যের অণুসমূহ সকল স্থলেই আন্দোলিত হয় না। এক খানি ধাতুনিৰ্ম্মিত খালের উপর কতকগুলি বালুক রাখিয়া তাহার এক প্রান্তে একটা দগু দ্বারা আঘাত করিলে একটা শব্দ উৎপাদিত হয় এবং সেই সঙ্গে বালুকণাগুলি কম্পিত হইতেছে, ইহাও দেখা ৰায় । থালার অণুগুলি আন্দোলিত না হইলে বালুক-কণাগুলি কখনই প্রকম্পিত হইতে পারে না। শঙ্কায়মান দ্রব্যের অণু সকলের আন্দোলনই যে শব্দ জ্ঞানের একমাত্র কারণ এরূপ স্বীকার করা যায় না। শঙ্কায়মান দ্রব্যের সন্নিহিত বায়ুরাশিতে অণুসমূহের আন্দোলন-সঞ্চারিত একটা তরঙ্গ উপস্থিত হইয় থাকে। সেই তরঙ্গ আসিয়া কৰ্ণপটহে আঘাত করিলেই শব্দজ্ঞান সমুপস্থিত হয় । । শবকর দ্রব্যের অণুসমূহের কম্পনে প্রথমে তৎসংস্কৃষ্ট বায়ুকণা সকল প্রকম্পিত হয়, সেই ধিকম্পনে তৎসংলগ্ন বায়ুকণাসমূহ ক্রমান্বয়ে কম্পিত হইয়া কর্ণকুহরে আসিয়া পটহে আহত হইলে শব্দ উপলব্ধি হয়। শব্দায়মান দ্রব্য এবং কর্ণপটহের মধ্যবর্তী বায়ুমধ্যে একটা শবতরঙ্গ যে বায়ুকণা গুলিকে স্থানচু্যত না করিয়া আন্দোলিত করিয়া যায় তাহ সহজেই অনুমেয়। বায়ুদ্বারা শত্ব পরিচালিত হয়, বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় স্থিরীকৃত হইয়াছে। বায়ুনিষ্কাশন্যন্ত্র সাহায্যে কোন গোলাকার কাচপাত্রের অভ্যন্তরস্থ বায়ু নিষ্কাশন কালে তন্মধ্যে স্থিত একটী ঘণ্টা যদি বাজান যায়, তাহা হইলে বায়ুর নিষ্কাশন অনুসারে ঐ শব্দ ক্রমশঃই মন্ত্ৰীভূত হইয়া আইসে এবং ঐ পাত্রট এক বারে বায়ুপৃষ্ঠ হইলে আর শব্দ শুনা যায় না। বায়ু দ্বারা যে শব্দ চালিত হয়, তাছার আরও অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়। জল মধ্যে ডুব দিয়া শব্দ শুনা যায়। বায়ু অপেক্ষা কাঠের শব্দ-পরিচালকত। গুণ অধিক। একখানি বৃহৎ চকোর কাঠের এক প্রাস্তে অঙ্গুলী দ্বারা টোকা মারিলে উহার অপর প্রাস্তে তাহী শ্রত হইয়া থাকে। কোন রজ্জ, বা তামার তার দ্বারাও শম্ব পরিচালিত হয়। অনেক সময় বালকের তাম্রকুটসেবনের কলিকার উপরের মুখে একটু পাতল চৰ্ম্ম আটিয়া তাহার মধ্য দিয়া শণস্বত্র চালাইয়া দূরবর্তী কোন বন্ধুর বাটতে ঐক্কপ একটা কলিকার রজ্জর অপর প্রান্ত বাধিয়া রাখে ও পরস্পরে কথাবার্তা কয়। ইহাতে অতি স্পষ্ট ভাবে শব্দ শ্রুত ন হইলেও কতক অস্পষ্ট শব্দ কর্ণকুহরে afé &# 1 on Telephone s Telegraph যন্ত্র সাহায্যে ঐরুপ তামার তার দিয়া কথা চালিত হইতেছে। পৃথিবী দ্বারাও শম্বী পরিচালিত হইয়া থাকে। রাত্রিকালে পৃথিবীর উপর কর্ণ সংস্পৃষ্ট করিয়া বিশেষ মনোনিবেশের সহিত শ্রবণ করিলে দূরপথে ধাবমান অশ্বাদির পদশব্দ শুনা যায়। অধুনা কলিকাতা মিউনিসিপালিটীর কর্তৃপক্ষগণ রাত্রিতে গৃহস্থ কলের জল অপব্যয় করিতেছেন কিনা অথবা জলের লেছনল মরিচ পড়িয়া ভিন্ন হইয়াছে কিনা, তাহ পরীক্ষা করিবার জন্য নলের গায় একটা লৌহ দ্বও লাগাইয়। তাছার প্রান্তভাগ কর্ণরন্থে, দিয়া জলনির্গমন শব্দ লক্ষ্য করিয়া থাকেন। পরীক্ষা; দ্বারা জানা গিয়াছে যে, শৰা বায়ুতরঙ্গ মধ্য দিয়া প্রতি সেকেণ্ডে ১১১৮ ফিট প্রধাবিত হয়। দুষ্ট বা তিন সেকেও পরে ঐ শব্দ তাছার দুই বা তিনগুণ দূর বাবধানে শ্রত হয়। এই কারণে দূরে কোন বস্তু শদিত হচলে আমরা অচিরেই তাহ। শুনিতে পাই । বায়ু অপেক্ষা জলের বেগ অধিক। জল মধ্যে শব্দ তরঙ্গ প্রতি সেকেণ্ডে ৪৭•৮ ফিট চলে। এই কারণে নদীতীরের তোপ বা বোমার শব্দ জলস্রোতে বহুদুর পয্যন্ত নীত হইয়া থাকে। লৌহদ্বারা শব্দ প্রতি সেকেণ্ডে ১৬৮•• ফিট, তাম্র দ্বার ১১৬• • ফিট এবং কোন কোন কাষ্ঠ দ্বারা ১৫ ••• ফিট পর্যন্ত দূৰ স্থানে চালিত হয়। শব্দায়মান দ্রব্যের অণু সকল যত অধিক আন্দোলিত হয়, শন্ধও তত অধিক হইয়া থাকে। যেখানে আন্দোলন কালে অণু সকল অল্প উন্নত ও অবনত হয়, সেইস্বলে শবোরও স্বল্পতা ঘটে। আবার শব্দবহু বায়ুর ঘনত্ব যে স্থলে যত অধিক হয় সে স্থলে শব্দও অধিকতর গভীর হয়। পৰ্ব্বতাদির উপরিস্থ বায়ু নিম্নস্থ বায়ু অপেক্ষ অনেক পাতলা, এই জন্ত অনেক সময় গিরিসঙ্কটাদিতে উচ্চৈঃস্বরে কথা না কহিলে দুরন্থ ব্যক্তি শুনিতে পায় না । যদি শঙ্কায়মান দ্রব্যের দিক হইতে বায়ু শ্রোতার অভিমুখে প্রবাহিত হয়, তাহা হইলে শব্দ যেরূপ গভীরতর শ্রত হওয়া যায়,