বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চতুর্বর্গের ফলবিচার

বাবাজি ভালোই পেতেন, আর লাগাও অনেকখানি জমি থাকত যাতে যজমানদের সাহায্যে বাবাজির পরিবারবর্গের ফলমূল-সবজির চাষ করে শৌখিন খাবারের যোগাড়টা হত। তাছাড়া অতিথি উপস্থিত হলে সেবার আয়োজন—দুধ ডিম পনীর মাংস—দেখলে মাসহারার হারটা মন্দ ছিল বলে মনে হত না। তার উপর রুশের প্রথামতো চৌপর দিন গরম চা তো চলতই।

 বাবাজির কাজের মধ্যে গ্রামবাসীদের জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে, নামকরণ উপলক্ষে ধর্মসংগত ক্রিয়াকর্ম তিনি চালিয়ে দিতেন; আর রবিবারে পর্ববারে সদুপদেশ দিতেন, বিধাতার খাতিরে নিজের হীনাবস্থা নির্বিবাদে মেনে নিতে, পরলোকের দিকে তাকিয়ে রাজার কর, ধর্মের বৃত্তি, যোগাবার ক্লেশ ভুলে থাকতে। শুধু মৌখিক উপদেশই বা কেন, বাবাজির সুখশান্তিময় জীবনযাত্রা দেখলে, ভগবান যা করেন ভালোর জন্যে সে বিষয়ে কি সন্দেহ থাকতে পারত।

 হঠাৎ এসে পড়ল বিপ্লব। সর্বত্র যেমন দেখা যায়, এখানেও তাই,—পায়ের তলার মানুষের মাথা তোলার বিপক্ষে কর্মকর্তায় ধর্মকর্তায় একজোট হলেন। মোহন্ত পুরুত পূজারি যতরকমের পাদ্রী ছিল সকলে মিলে ভগবানের নামে ধর্মের ধ্বজা তুলে, ইহকাল পরকাল নাশের ভয় দেখিয়ে বিপ্লবীদের ঠাণ্ডা করার চেষ্টা পেলেন। কিন্তু তারা ভোলবারও নয়, ডরাবারও নয়, যেমন গোঁয়ার তেমনি ঠোঁটকাটা।

 বিপ্লবীরা বলে বসল—দলে না থাকলেই শত্রু; কাজেও দেখাল তাই। মঠ মন্দির গির্জে সমাধি যার যার সম্পত্তি সব কেড়ে নিয়ে, পাদ্রীবাবাজিদের ছোটো বড়ো সবাইকে ইতরের কোঠায় নামিয়ে এনে, তাদেরই দেওয়া উপদেশ মতো পরকালের আসার আশে ইহকালের জ্বালা জুড়োবার সুযোগ পাইয়ে দিলে।

১৪৪