বেদের গল্প
সম্রাটের মোসাহেবের দল তাক করে বসে ছিল, রেলধারে খালধারে জমিদারি পত্তন করবে, প্রজা দিয়ে ফসল ফলাবে, কারখানা চালাবে, তাদিকে দুটি দুটি খেতে দেবে, মোটা টাকা পৌঁছবে জমিদারের খাজানায়। কিন্তু বেদেরা কায়েম হয়ে জুড়ে বসলে সব মাটি। তখন তাদিকে উচ্ছেদ করার ঝামেলা পোয়াবে কে।
হুকুম জারি হল—“নিকালো!”
আমলায় ধরে আনতে বললে, পেয়াদায় বেঁধে আনে,—রাজকায়দার এ ধারা তো জাহিব আছেই। সদর সেনাপতি সেদিকের সেনানায়ককে পত্র দিলেন—“য়োমুদে (তুর্কি বেদে)রা খালধারে যেখানে যেখানে আড্ডা করেছে, পলটন চড়াও করে তাদিকে সরিয়ে দেবেন।”
কশাক-পলটনের সরদারকে ডাকিয়ে সেনানায়ক বললেন, “সওয়ার নিয়ে রাজার হুকুম তামিল করে এসো, দেখো যেন একটাও বাকি না থাকে।”
এক সার কশাক-সওয়ারের ভীষণ চেহারা দূর থেকে দেখেই তো বেদেদের আক্কেল গুড়ুম। যে পারলে সে ঘরবাড়ি পরিবার জিনিসপত্র ফেলে, ঘোড়ায় চেপে মার টেনে দৌড়। কিন্তু তাতে কি রেহাই পায়—অক্ষরে অক্ষরে হুকুম মানতে না পারলে সেপাইয়ের ইজ্জত থাকে কই। তার উপর যণ্ডা গুণ্ডা হলে যা হয়, হঠাৎ খুন-চাপা রোগে ধরে। কাজেই তেজী ঘোড়া ছুটিয়ে একদল সওয়ার পলাতক বেদেদের টাট্টুগুলোকে তেড়ে ধরল আর পাশাপাশি দৌড়তে দৌড়তেই চমৎকার হাত-সাফাই দেখিয়ে তলোয়ারের এক এক কোপে এক এক বেদের মাথা ওড়াল। ওদিকে, ছাপ্পরের আশেপাশে যেসব ছেলে বুড়ো-স্ত্রীলোক পড়ে ছিল, আর এক দল গিয়ে তাদিকে সাবাড় করল।
কথাটা বিশ্বাস করা একটু শক্ত—না?
১৫