চতুর্বর্গের ফল বিচার
বসেন,—অপরাধের জড়-মারার ভাবনা ছাড়া আর সবই ভাবেন। জড় মারার উপায় করছেন USSR-এর বিপ্লবীরা।
এক বিষে, এক ভুলে যদি নরনারী-সম্বন্ধ অসুস্থ হয়ে থাকে, তাহলে এক ওষুধেই বা স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে পারা যাবে না কেন—ব্যক্তির হাতে সম্পত্তি থাকায়, মানুষের সমানভাবে খাওয়া-পরার, স্বাভাবিকভাবে মেলামেশার যেসব অন্তরায় হয়ে থাকে, সমবায়ের হাতে সম্পত্তি এনে ফেলায় এক বিধানে সে সব উড়ে গেল। নারীও আর সম্পত্তির কোঠায় রইল না, সে হল সব বিষয়ে নরের সম-অধিকারী।
মানুষ হল অর্ধ পশুদেব; এই জোড়া স্বভাবের দোটানায় পড়ে তার যত গোল বাধে। যেসব দেহসুখ পশুরও আছে মানুষেরও আছে, একদিকে সেগুলো সাদাভাবে ভোগ না করে বুদ্ধির জোরে জবরদস্তি বাড়াবার যেসব দুর্ভোগ, তার কথা তো আগেই বলা হয়েছে। অন্যদিকে মানুষ পেয়েছে ডেপুটিস্রষ্টার পদ, সৃষ্টিকাজেই তার মানুষের উপযুক্ত উঁচুদরের আনন্দ পাবার উপায়, সৃষ্টির নব নব উন্মেষে তার ব্রহ্মাস্বাদের ভূমানন্দ পর্যন্ত পাবার উপায় আছে।
কিন্তু ব্যক্তিগত স্বার্থের উপর চলছে যে-আধুনিক সভ্যতা, তার হুড়োহুড়ির চোটে শ্রান্ত-ক্লান্ত গৃহস্থের সৃষ্টি কাজের অবসর কোথায়। তাই সে নিশিদিন অবসাদে ডুবে থাকে, তাই জলে-পড়া লোক যেমন কুটোটা-কাটাটা আঁকড়ে ধরে, সে-ও তেমনি সহজে-পাওয়া-যায় যে-ইন্দ্রিয়সুখ, সময়ে-অসময়ে স্থানে-অস্থানে তাই নিয়ে টানাটানি করে। অহরহ অন্নচিন্তার জ্বালা থেকে সে যদি নিস্তার পায়, উচ্চ-আনন্দলাভের আস্বাদ পায়, সে কি সস্তা সুখের শান্তিভোগের ধার দিয়ে আর যেতে ইচ্ছে করবে।
১৬৬