বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বিশ্বমানবের লক্ষ্মীলাভ.djvu/৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

জলের কথা

সমুদ্রের তলায় যা-কিছু চুন বালি শামুক ঝিনুক সব মাথায় নিয়ে এক সার পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। এইরকমেই একটা ধাক্কায় জন্মেছিল হিমালয়শ্রেণী—এখনো তার চুড়োয় চুড়োয় জলচর শামুক ঝিনুকের খোলস পাওয়া যায়; মাটির ঢাকা খসে গিয়ে তার ভিতরকার স্তর বেরিয়ে পড়লে পাথরগুলোর দুমড়ে খাড়া হওয়ার চেহারা পষ্ট দেখা যায়।

 ডাঙায় ডাঙায় ঠেকতেই মাঝে যে জল ছিল তা দুদিকে ছিটকে বেরোবে। দুধারে ডাঙার জমিটা চাপের চোটে কুঁচকে ঢেউ খেলিয়ে যাবে, আলুর খেতের মতো দাঁড়ার পর খাল, খালের পর দাঁড়া। কোথাও জলের নিচে থেকে মাটি জাগবে, কোথাও জল চড়ে এসে মাটি তলাবে। এরকমেরই ঘটনায় কোনো সময় হয়তো এ্যাটলাণ্টিস (Atlantis) দেশ তলিয়ে গিয়েছিল; লোহিত সাগর মাঝে চড়ে এসে আরবে আফ্রিকায় বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে; ওলন্দাজদের দেশ নামিয়ে দিয়ে তাদিকে ত্রাহি ত্রাহি শব্দে বাঁধ বাঁধিয়ে রেখেছে।

 এই ভাবেই সমুদ্র পরশুরামকে কোঙ্কন-কেরল দেশ দান করেছিল, আর যাদবকুলের রাজধানী কেড়ে নিয়েছিল।

 পাহাড় খাড়া হলে তার উপর বৃষ্টি হবে, বরফ পড়বে, খাঁজে খাঁজে ঝরনা নেমে আসবে, জল নিচে পৌঁছে স্রোতা হয়ে জমির ঢাল ধরে ধরে চলতে থাকবে। গাছ যে রকম গুঁড়ি থেকে আরম্ভ করে ডালপালা ছড়ায়, নদীর বাড় ঠিক তার উলটো, শাখাপ্রশাখা নানা দিক থেকে একস্রোতে জুটলে পর, শেষে গুঁড়ির মতো ভরা নদী জেঁকে ওঠে। প্রথম দিকটা, যাকে নদীর ছেলেবেলা বলা যেতে পারে, নদীতে নদীতে শাখা কাড়াকাড়ি খেলা চলে, একই স্রোতা একবার এর দিকে একবার ওর দিকে যায়। কিছুদূর এগিয়ে, যে-নদী অনেক শাখা নিয়ে

৩৫